প্রতীকী ছবি
বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের পর থেকে নেতা, কর্মী এবং জনপ্রতিনিধিদের দল ছেড়ে তৃণমূলে চলে যাওয়ার প্রবণতায় উদ্বিগ্ন বিজেপি নেতৃত্ব। বস্তুত, দলে ভাঙন আটকানোই এখন তাঁদের কাছে মূল চ্যালেঞ্জ। দিনহাটা, শান্তিপুর, খড়দহ এবং গোসাবার উপনির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সেই চ্যালেঞ্জই গুরুত্ব পেয়েছে বলে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের মত। বিজেপির ওই নেতারা জানাচ্ছেন, জেলা স্তর থেকে দাবি উঠেছিল, দল ছেড়ে তৃণমূলে চলে যেতে পারেন, এমন কাউকে যেন ওই চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী করা না হয়। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ওই দাবিকে মান্যতা দিয়েছেন। যে কারণে, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পরে দলে আসা কাউকে ওই চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী করা হয়নি। বিজেপি নেতৃত্বের ওই অংশের আশা, ভোটে হারুন বা জিতুন, ওই চার জন দল ছেড়ে যাবেন না। আশু ভবিষ্যতে সব ভোটেই এই বিষয়টি মাথায় রেখে প্রার্থী বাছতে চান বিজেপির ওই নেতারা।
বিজেপি সূত্রের ব্যাখ্যা, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে দল এ রাজ্যে ১৮টি আসন জেতার পর যাঁরা অন্য দল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে এসেছেন, তাঁদের অনেকেই ভেবেছিলেন, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে বিজেপি জিতবে। ফলে ক্ষমতার সঙ্গে থাকতে আগেভাগেই দল বদল করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু ২০২১-এ বিধানসভা ভোটে বিজেপি হেরে যাওয়ায় তাঁদের আশাভঙ্গ হয়েছে এবং ক্ষমতার সঙ্গে থাকার জন্যই তাঁরা তৃণমূলে চলে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে দলে ভাঙন ঠেকাতে বিজেপি নেতৃত্ব এখন কর্মীদের মধ্যে প্রচার করছেন, ভোটে জেতাই দলের একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। দলের মতাদর্শ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়াই নেতা-কর্মীদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। বিজেপি নেতাদের এই মনোভাবেরই প্রতিফলন ঘটেছে চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে দলের প্রার্থী বাছাইয়ে। যেমন— দিনহাটায় প্রার্থী করা হয়েছে অশোক মণ্ডলকে, যিনি ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। শান্তিপুরের প্রার্থী নিরঞ্জন বিশ্বাস বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক এবং বহু পুরনো সদস্য। খড়দহে দলের যুব মোর্চার নেতা জয় সাহাকে প্রার্থী করা হয়েছে। গোসাবার প্রার্থী পলাশ রানা বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, “দল যখন কাউকে প্রার্থী করে, তখন ধরে নেওয়া হয় মতাদর্শের প্রতি তাঁর আস্থা আছে। কিছু বিচ্যুতির ঘটনা যেমন ঘটেছে, তেমনই আস্থাও প্রাসঙ্গিক। তবে নতুন-পুরনো ভাগাভাগিতে দল বিশ্বাস করে না। দল বিশ্বাস করে নিজস্ব মতাদর্শের বহমানতায়।”
তাৎপর্যপূর্ণ হল, বিজেপি নেতারা এখন দলে ভাঙন ঠেকাতে ভোটে জেতার চেয়ে মতাদর্শ প্রতিষ্ঠার লড়াইকে অগ্রাধিকার দিলেও বিধানসভা ভোটের আগে এর ঠিক বিপরীত কথা বলতেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সেই সময়ে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে বার বার বলতেন, ভোটে জেতাই আসল কথা। যিনি জিততে পারবেন, তাঁকেই প্রার্থী করা হবে। তিনি দলে নতুন না পুরনো, তা প্রধান বিবেচ্য হবে না। বিজেপির তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, “ভোটে জিততে না