বাড়তি নজর বাংলায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বুথ স্তরে বাড়াতে হবে শক্তি। মে মাসের গোড়ায় রাজ্য সফরে এসে বুথভিত্তিক সংগঠন গড়ে তুলতে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ বার কী ভাবে বুথে শক্তি বাড়াতে হবে তা জানিয়ে নির্দিষ্ট কর্মসূচি ঠিক করে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। বিজেপি সূত্রে খবর, নির্দেশে বলা হয়েছে নিজের নিজের এলাকার দুর্বল ২৫টি বুথে সংগঠন গড়ে তুলতে হবে প্রত্যেক বিধায়ককে। আর সাংসদদের ক্ষেত্রে এমন বুথের সংখ্যা হবে ১০০। এই কর্মসূচি যাতে সঠিক ভাবে পালন হয় তা দেখতে জুন মাসের গোড়াতেই রাজ্যে আসতে পারেন নড্ডা। জুলাইতে আসার কথা শাহের। তবে তার আগেই বুথে বুথে কেমন হল কর্মসূচি তার রিপোর্ট স্বয়ং শাহ দেখবেন বলে জানা গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে বাংলার সর্বত্র কর্মসূচি পালিত হবে। কী ভাবে হবে তা ঠিক করতে খুব তাড়াতাড়ি রাজ্যের বাকি নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসব।’’
২০১৪ সালের ২৬ মে প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেই হিসাবে বুধবার মোদী সরকারের আট বছর পূর্ণ হল। সেই দিনেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে বুথ স্তরে সংগঠন শক্তিশালী করার কাজ শুরু করল বিজেপি। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, গোটা দেশের বিজেপি সাংসদ, বিধায়কদের নিয়ে বুধবার ভার্চুয়াল বৈঠক করেন নড্ডা। সেখানেই ঠিক হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত দেশ জুড়ে চলবে বুথ স্তরে সংগঠন বাড়ানোর কাজ। আর তাতে বাংলাকে যে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তা বুঝিয়ে জুনের গোড়ায় স্বয়ং নড্ডা রাজ্যে আসতে চান। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, আগামী ৭ ও ৮ জুন বাংলায় আসতে পারেন নড্ডা। উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করে তিনি কর্মসূচির অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে পারেন। বুধবার কলকাতায় রাজ্য দফতর থেকে বৈঠকে যোগ দেন সুকান্ত। তমলুকের দফতর থেকে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অন্য সাংসদ-বিধায়কেরাও নিজের নিজের এলাকা থেকে বৈঠকে যোগ দেন।
এই বৈঠকেই বাড়তি গুরুত্ব পান মেদিনীপুরের সাংসদ তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় দফতরে বৈঠকের প্রারম্ভিক বক্তৃতা করেন তিনি। সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপকে নিজের লোকসভা এলাকার পাশাপাশি আট রাজ্যে এই কর্মসূচি সফল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বুথ স্তরে শক্তি বাড়াতে অতীতেও এমন কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। অনেক সময়েই দলের নেতারা সেই সব বুথে কর্মসূচি করেছেন বা রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন যেগুলিতে আগে থেকেই দলের শক্তি রয়েছে। এ বার বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে বিধায়ক, সাংসদেরা নিজেদের ইচ্ছামতো বুথ বাছতে পারবেন না। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই সমীক্ষা করে বেছে দেবেন বুথ। গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, বুথ বাছার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ফর্মুলাও তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি বিধানসভা বা লোকসভা এলাকা ধরে সেখানে হওয়া শেষ নির্বাচনে যে সব বুথে খারাপ ফল হয়েছে সেখানে সেখানেই যেতে হবে নেতাদের। গড়ে তুলতে হবে কমিটি। বাড়াতে হবে সংগঠন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কর্মসূচি আপাতত মাসখানেকের হলেও লোকসভা নির্বাচনের আগে দফায় দফায় ‘বুথ সশক্তিকরণ অভিযান’ চলতে থাকবে।