BJP

BJP: নববর্ষের পরে নবান্ন অভিযানে বিজেপি

এত দিন যা ছিল আভাসে-ইঙ্গিতে, শুক্রবার আনুষ্ঠানিক বৈঠকে সেই ক্ষোভ উগরে দিলেন বিজেপি বিধায়কেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২২ ০৭:১৫
Share:

ফাইল চিত্র

এত দিন যা ছিল আভাসে-ইঙ্গিতে, শুক্রবার আনুষ্ঠানিক বৈঠকে সেই ক্ষোভ উগরে দিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। যার মূল কথা— রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁদের কার্যত কোনও সমন্বয় থাকছে না। এমনকি, বিধানসভা অধিবেশনের আগেও তাঁদের সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের বৈঠক হয় না। নিজাম প্যালেসে এ দিনের বৈঠকে ওই সমস্যা মেটানোর জন্য কয়েকটি পদক্ষেপের পাশাপাশি কিছু আন্দোলন কর্মসূচিরও সিদ্ধান্ত হয়। নববর্ষের পরে নবান্ন অভিযান যার অন্যতম।

Advertisement

নিজাম প্যালেসে এ দিন দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, সহ সভাপতি তথা সাংসদ অর্জুন সিংহ প্রমুখ। বিজেপি সূত্রের খবর, মিহির গোস্বামী, বঙ্কিম ঘোষ, শঙ্কর ঘোষ, নরহরি মাহাতো, বিশাল লামা-সহ কয়েক জন বিধায়ক অভিযোগ করেন, দল তাঁদের পাশে না দাঁড়ালে কাজ করা কঠিন হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আগ্রহ থাকলেও ভোট নেওয়ার জন্য দলের প্রস্তুতি নেই। জেলায় জেলায় যোগ্য লোকের বদলে কোনও কোনও নেতার ‘কাছের লোককে’ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

বিজেপি সূত্রের আরও খবর, সমস্যাগুলি শুনে সুকান্ত এবং অমিতাভ বলেন, এ বার থেকে দু’মাস অন্তর রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বিধায়কদের বৈঠক হবে। জেলায় জেলায় তৈরি হবে সমন্বয় কমিটি। বিধায়কদের নিজেদের কেন্দ্রে আটকে না রেখে রাজ্যের সর্বত্র মানুষের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে কাজে লাগানো হবে। ওয়ার্ডভিত্তিক জনসংযোগ গড়ে তুলতে হবে বিধায়কদের। জেলার বৈঠকগুলিতেও সংশ্লিষ্ট বিধায়কদের ডাকা হবে। জেলার বা মণ্ডলের নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব ঘোচাতে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করার পরামর্শও বিধায়কদের দেন সুকান্তরা। জেলায় জেলায় নতুন কমিটি নিয়ে দলের অন্দরে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তা ঠেকাতেও বিধায়কদের বার্তা দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব।

Advertisement

দলীয় সূত্রের খবর, বৈঠকে ১৫ এপ্রিলের পর নবান্ন অভিযানের পরিকল্পনা হয়েছে। আর চলতি মাসেই ডেউচা পাচামিতে যাবেন বিজেপির সব বিধায়ক, সাংসদ এবং রাজ্য নেতৃত্ব। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বৈঠকের পরে বলেন, “ডেউচা পাচামিতে বড় দুর্নীতির গন্ধ আছে। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারকে ওই দুর্নীতি করতে দেব না। যাঁরা স্বেচ্ছায় জমি দেবেন, তাঁদের বাধা দেব না। কিন্তু জোর করে জমি নিতে গেলে আমরা বাধা দেব।” দলীয় সূত্রের আরও খবর, বৈঠকে ঠিক হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে কেন্দ্রীয় সরকারি নানা প্রকল্প থেকে রাজ্যের সাধারণ মানুষের ‘বঞ্চনা’র কথা জানাবেন বিধায়কেরা।

তৃণমূলের অবশ্য বক্তব্য, বিজেপির ডেউচা পাচামি সংক্রান্ত অভিযোগের সারবত্তাই নেই। রাজ্যের মন্ত্রী তথা দলের নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী দুর্নীতি করেন না, দুর্নীতি সহ্যও করেন না। আর তিনি কারও জমি জোর করে নেওয়ার নীতিগত বিরোধী। বিধানসভাতেও সে কথা তিনি জানিয়েছেন।” ফিরহাদের কটাক্ষ, “যে নিজে চোর, তার সব সময় অন্যকে নিজের মতো মনে হয়। চোর যে ছিল, সে বিজেপিতে চলে গিয়েছে।” আর বিজেপির নবান্ন অভিযান নিয়ে ফিরহাদের বক্তব্য, “বিজেপির এখনও এই অভিযান করার মতো কোমরের জোর হয়নি। বরং নবান্নে বেড়াতে এসে দেখে যেতে পারে, কী সুন্দর!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement