বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ফাইল চিত্র।
আগামিকাল রবিবার ভবানীপুর কেন্দ্রের ভোট গণনা। তার ঠিক আগে দলের এজেন্টদের ভোট গোণা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বুথ ছাড়তে নিষেধ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শুক্রবার দলের এক সভায় তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চাশ হাজার ভোটে পিছিয়ে থাকলেও শেষপর্যন্ত বুথে থাকবেন।’’ একই মনোভাব নিয়ে চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন ও পুরভোটেও লড়াইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এ রাজ্যে বুথ স্তরে সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে বরাবরই চর্চা হয়েছে বিজেপির অন্দরে। এ দিন নবনির্বাচিত রাজ্য সভাপতি সুকান্তের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও তা নানা ভাবে দলের চর্চায় ফিরেছে। নতুন সভাপতি হিসাবে সুকান্ত যেমন গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তেমনই বিধানসভা ভোটে দলের পরাজয়ের পিছনে এই বুথ সংগঠনের খামতির কথা টেনে এনেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুধু তাই নয়, সেই খামতি দূর করতে দল যে তাঁর প্রস্তাব গ্রহণ করেনি, এ দিন তা-ও প্রকাশ্যে এনেছেন তিনি।
বিধাননগরে পূর্বাঞ্চলীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে এ দিন ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল রাজ্য বিজেপি। সেখানেই দলের নবনির্বাচিত রাজ্য সভাপতির কাছে সেই প্রস্তাব কার্যকর করার কথা বলে ঘুরিয়ে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দিকে আঙুল তুলেছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বুথ সংগঠনে দুর্বলতার জন্য আমরা ধাক্কা খেয়েছি। বুথ সংগঠন জরুরি।’’ শুভেন্দুর কথায়, ‘‘রাজ্যের ৭৭ হাজার বুথে সংগঠন তৈরি কঠিন। তবে বেশির ভাগ বুথে তা করতে না পারলে ক্ষমতায় আসা কঠিন। তাতে বেশ কিছু আসন পাওয়া যেতে পারে, সরকার গড়া যায় না।’’ এই প্রসঙ্গেই শুভেন্দু বলেন, ‘‘গত জুন মাসে দলের রাজ্য কার্যকারিনীর সভায় রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে কতগুলো প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আশা করি, নতুন সভাপতি সেগুলি সম্পর্কে যত্নবান হবেন।’’ কটাক্ষের সুরে তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘শেখার কোনও বয়স নাই। শিখতে কোনও লজ্জা নাই।’’
দলের নির্বাচনী ব্যর্থতার কারণ হিসেবে বিজেপির গায়ে ধর্মীয় তকমা লাগিয়ে দেওয়া এবং এনআরসি নিয়ে তৃণমূলের প্রচারের উল্লেখ করেছেন। দলের সদ্য প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবুও ভোটের ফল বিশ্লেষণ করে বলেন, ‘‘আমরা যে সরকার গড়তে পারি তা মানুষের বিশ্বাসে আনতে পারিনি। মানুষ যে দিন আমাদের যোগ্য মনে করবেন সে দিন ক্ষমতায় আনবেন। ততদিন প্রতি ইঞ্চিতে এই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’’ তবে সেই লড়াইয়ে তিনি বিরোধী দলনেতা হিসাবে শুভেন্দুর গুরুত্বও স্বীকার করে নিয়েছেন।
এই টানাপড়েনে যোগসূত্র হিসাবে দুই নেতা দিলীপ ও শুভেন্দুকে সঙ্গে নিয়ে লড়াইয়ের কথা বলেছেন সুকান্ত। তবে দিলীপকে তিনি রাজ্য বিজেপির অন্যতম সফল সভাপতি হিসাবেও চিহ্নিত করেন।