বিজেপি বিধায়কদের অবস্থান। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে নিয়োগ-দুর্নীতির প্রতিবাদে কলকাতায় ধর্না-অবস্থান চালাল বিজেপি। অন্য দিকে, আদালতের প্রতক্ষ্য নজরদারিতে তদন্তের দাবি বহাল রাখল সিপিএম।
ইডি-র হাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতার এবং টাকা উদ্ধারের ঘটনার প্রেক্ষিতে অগস্ট মাস জুড়ে অবস্থান, ধর্না এবং আরও নানা কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বিজেপি। তারই অঙ্গ হিসেবে মঙ্গলবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে ধর্না-অবস্থান ছিল বিজেপির পরিষদীয় দলের তরফে। দিল্লিতে থাকায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য ওই কর্মসূচিতে ছিলেন না। বঙ্কিম ঘোষ, অম্বিকা রায়, পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়, আশিস বিশ্বাস, অগ্নিমিত্রা পাল, সুব্রত ঠাকুর, অশোক দিন্দা, নীলাদ্রি শেখর দানা-সহ দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ বিজেপি বিধায়ক শামিল হয়েছিলেন অবস্থানে। প্রথমে কলকাতা পুলিশের তরফে ধর্নায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরে মঞ্চ না বাঁধার শর্তে অবস্থানে বসার অনুমতি পান বিধায়কেরা। নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুটা পরে তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান শুরু হয়। রাস্তায় ‘বাংলার লজ্জা মমতা’ লেখা পোস্টার হাতে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়কেরা।
মালদহে জেলা পরিষদে ঘেরাও ও বিক্ষোভের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে পার্থ এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের গ্রেফতার প্রসঙ্গে এ দিন সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘সবে তো দাবার বোড়েরা ধরা পড়েছে! আসল রাজা-মন্ত্রীরা পিছনে আছে। সবাইকে ধরতে হবে।’’ কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করে প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। দল ভাঙানোর জন্য, ‘অনৈতিক ভাবে’ সরকার ফেলার জন্য বা ‘ভয় দেখানো’র জন্য কী ভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্যসমাপ্ত বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বিক্ষোভ-সভার আগে এ দিন মালদহে এই প্রসঙ্গেও সরব হয়েছেন সূর্যবাবু। তবে এ রাজ্যের ঘটনার ক্ষেত্রে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই মুহূর্তে এখানে ইডি ও সিবিআই যে তদন্ত করছে, তা উচ্চ আদালতের নির্দেশে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ঘটনা একটু আলাদা। ইডি, সিবিআইকে এ রাজ্যের তদন্তের ব্যাপারে আদালতকে নির্দিষ্ট ভাবে জানাতে হবে। আদালতের প্রত্যক্ষ নজরদারিতে তদন্ত সুনিশ্চিত করার কথা বলছি আমরা।’’ বিজেপি কি এ রাজ্যেও সরকার ভাঙার ‘চক্রান্ত’ করতে পারে? সূর্যবাবু বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার ভাঙলে তৃণমূলকে নিয়েই ভাঙবে। সরকার ভাঙলে সেখানে বিজেপি আর হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের শেয়ার কী, তা বুঝতে হবে।’’ কলকাতায় বেহালায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সভা করেছে সিপিএম।
নিয়োগ-দুর্নীতির তদন্তের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়ে আইনজীবী সংগঠন ‘আইলাজ’-এর রাজ্য সম্পাদক দিবাকর ভট্টাচার্য এবং মানবাধিকার সংগঠন পিইউসিএল-এর রাজ্য সম্পাদক অম্লান ভট্টাচার্য এ দিন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি দিয়ে আবেদন জানিয়েছেন, জনমানসে ‘বিভ্রান্তি’ দূর করতে এসএসসি-টেট উত্তীর্ণ মেধা-তালিকাভুক্ত চাকরি-প্রার্থীদের দ্রুত নিয়োগপত্র দিতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিক আদালত।