কংগ্রেস এবং বামেদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বিস্তর। কিন্তু তৃণমূলের কাছে শুধু আরও সক্রিয় সহযোগিতার আর্জি! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাস তালুকে এসে শুক্রবার এমনই বার্তা দিয়ে গেলেন বিজেপি-র সাংসদ এবং অন্যতম জাতীয় মুখপাত্র এম জে আকবর।
সদ্যসমাপ্ত বাদল অধিবেশনে সংসদ চলতে না দেওয়ার জন্য কংগ্রেস এবং তার সহযোগীদের নিশানা করেছে বিজেপি। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত, গোটা দেশে কংগ্রেস এবং বাম সাংসদদের এলাকায় গিয়ে প্রচার চালানো হবে যে, কী ভাবে ওই সাংসদেরা দেশের অর্থনীতি ও উন্নতির স্বার্থে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। দিল্লিতে অরুণ জেটলি, প্রকাশ জাভড়েকরদের মতোই কলকাতায় সেই দায়িত্ব পালন করতে এসেছিলেন আকবর। কংগ্রেস শুধু একটি পরিবারের (গাঁধী পরিবার) জন্য লড়ছে আর বিজেপি লড়ছে দেশের জন্য— এই চেনা কথারই পুনরাবৃত্তি করেছেন তিনি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ থেকে সব চেয়ে বেশি সাংসদ যাদের, সেই তৃণমূলও তো কংগ্রেসের সাসপেন্ডেড সাংসদদের পাশে দাঁড়িয়ে অধিবেশন বয়কট করেছে? তৃণমূলের এই অবস্থানের বিরুদ্ধে একটি কড়া শব্দও ব্যবহার করেননি! বরং, পণ্য পরিষেবা (জিএসটি) বিলে মৌখিক ভাবে তৃণমূল যে সমর্থন করার কথা বলেছিল, তার প্রেক্ষিতেই এ দিন কলকাতা প্রেস ক্লাবে আকবরের মন্তব্য, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশে তৃণমূলের আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া উচিত। তৃণমূলকে বলব, এই ব্যাপারে আরও তৎপর হোন।’’
দিল্লি-সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে বেরিয়েই তৃণমূল নেত্রী মমতা বিজেপি-বিরোধী জোট গড়ার স্বার্থে শরদ পওয়ার, মুলায়ম সিংহ যাদব, শরদ যাদবদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন, সেই ব্যাপারে তাঁদের বক্তব্য কী? এ বার আকবরের জবাব, ‘‘স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে যে কোনও নেতা বা নেত্রী যে কোনও নেতার সঙ্গে দেখা করতেই পারেন! এতে কী বলার আছে!’’ কলকাতায় রাহুল সিংহদের পাশে বসিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতিনিধি হিসাবে এ দিন আকবরের সুরে তৃণমূল সম্পর্কে বিজেপি-র শীর্ষ স্তরের সাম্প্রতিক মনোভাবই ধরা পড়ছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের ধারণা।
বিজেপি-র তীব্র আক্রমণের জবাবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান অবশ্য বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস দলের গৌরবময় অতীত আছে, বর্তমান আছে, ভবিষ্যতও থাকবে। সমালোচনার জবাব দিতে না পেরে দিশাহারা নরেন্দ্র মোদীরা নেহরু-গাঁধী পরিবার এবং কংগ্রেসকে অশালীন ভাবে আক্রমণ করে যাচ্ছে!’’