CV Ananda Bose

আনন্দের ভূমিকায় ‘ব্যথিত’ বিজেপি, ‘গো ব্যাক’ বলে রীতি ভাঙা হয়েছে, দাবি তৃণমূলের

শু‌ভেন্দু জানিয়েছেন, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তাঁর কোনও ক্ষোভ নেই। তবে রাজ্য সরকারের লিখে দেওয়া বক্তব্যে যে ‘অসত্য তথ্য’ দেওয়া হয়েছে, তা তিনি এড়িয়ে যেতে পারতেন বলে মনে করছে বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:০৩
Share:

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ফাইল চিত্র।

বিধানসভায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভাষণে তাঁরা ‘ব্যথিত’ হয়েছেন বলে জানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত ভাবে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তাঁদের কোনও ক্ষোভ নেই। তবে রাজ্য সরকারের লিখে দেওয়া বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে যে ‘অসত্য তথ্য’ দেওয়া হয়েছে, তা তিনি এড়িয়ে যেতে পারতেন বলে মনে করছে বিজেপি। বিধানসভায় রাজ্যপালের বক্তব্যের সময় স্লোগান তোলা এবং বিক্ষোভ দেখানো নিয়ে বিজেপির সমালোচনায় সরব হয়েছে শাসকদল তৃণমূল। রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দাবি, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তুলে সাংবিধানিক রীতিভঙ্গ করেছে বিজেপি।

Advertisement

হইহট্টগোলের মধ্যে রাজ্যপালের ভাষণ শেষ হওয়ার পর বুধবার দুপুর ৩টে নাগাদ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শুভেন্দু। পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন এবং আবাস যোজনায় কেন্দ্রীয় অনুদান পাওয়া সত্ত্বেও রাজ্যপালের মুখ দিয়ে বলানো হয়েছে রাজ্য কোনও কেন্দ্রীয় সাহায্য পাচ্ছে না। রাজ্যপালের বক্তব্যে যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকার কথা বলা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিরোধী দলনেতা। নওশাদ সিদ্দিকির গ্রেফতারির প্রসঙ্গ তুলে রাজ্য সরকারকে খোঁচা দিয়ে তিনি প্রশ্ন করেন, “এটাই কি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির?”

Advertisement

বিরোধী দলনেতার মুখে উঠে আসে রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, আমরা আশা করেছিলাম তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল কিংবা বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ধনখড়ের মতো তিনি শক্ত মেরুদণ্ডের পরিচয় দেবেন। কিন্তু উনি (রাজ্যপাল বোস) সরকারের লিখে দেওয়া বক্তব্যই পাঠ করলেন।” রাজ্যপালকে দিয়ে ‘মিষ্টি, মিষ্টি’ কথা বলানো হলেও রাজ্যের ‘প্রকৃত অবস্থাটা’ তাঁরা রাজ্যপালের কাছে তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

বিধানসভায় বিজেপির বিক্ষোভ নিয়ে মুখ খুলে ফিরহাদ বলেন, “রাজ্যপাল, রাষ্ট্রপতি, এঁরা প্রত্যেকেই সাংবিধানিক পদে আছেন। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে এ ভাবে বিক্ষোভ দেখানো যায় না।” রাজ্যপালের উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া নিয়ে কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, “সাংবিধানিক রীতি না জেনেই বিধানসভায় চলে এসেছেন বিজেপি বিধায়করা।” মতপার্থক্য থাকলেও তাঁরা যে ধনখড়ের বিরুদ্ধে এমন বিক্ষোভ দেখাননি, সে কথাও স্মরণ করিয়ে দেন ফিরহাদ।

বাজেট অধিবেশনের সূচনায় রাজ্যপালের ভাষণকে ঘিরে উত্তপ্ত হয় রাজ্য বিধানসভা। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বক্তব্যে দুর্নীতিকে আড়াল করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে অধিবেশন কক্ষেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। পরে ‘চোর ধরো, জেল ভরো’ স্লোগান তুলে বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করেন তাঁরা।

বিক্ষোভ, স্লোগানের মধ্যে রাজ্যপাল অবশ্য তাঁর পুরো বক্তৃতাই করেন। এক সময় তুমুল বিক্ষোভ এবং স্লোগান দেওয়ার জেরে রাজ্যপালের বক্তব্য শোনা না গেলেও থামেননি আনন্দ বোস। লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বিধানসভা চত্বর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ও বিজেপি বিধায়করা রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement