উক্তা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
রাজনৈতিক সভা নয়, ধর্মীয় সভা। প্রচার ছিল দু’পক্ষেই। কিন্তু দিনের শেষে অভিযোগ উঠল, ধর্ম সভা শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক সভাতেই পরিণত হল। অন্যতম বক্তা বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
মতুয়া সম্প্রদায়ের ‘ধর্ম’সভায় যোগ দিতে যাওয়ার আগে কোনও কোনও বিজেপি নেতা দাবি করেছিলেন, ‘‘রাজনীতি করতে যাচ্ছি না। ধর্মসভায় যাচ্ছি।’’ গোপালনগরে সভার আয়োজকেরাও রাস্তাঘাট মুড়ে দিয়েছিলেন মতুয়াদের পতাকায়। সঙ্গে পোস্টার— ‘রাজনীতিমুক্ত ঠাকুরবাড়ি গড়ে তুলুন’। দুপুরে সেই সভায় কৈলাস ও অন্য বিজেপি নেতাদের ডঙ্কা-কাঁসর বাজিয়ে সভাস্থলে নিয়ে আসা হয়। কৈলাস মঞ্চে কীর্তনও করেন। তার পরেই বক্তৃতায় টেনে আনেন রাজনীতি।
তিনি বলেন, ‘‘হরিচাঁদ ঠাকুরের যে অনুগামীরা বাংলাদেশ থেকে এ দেশে এসেছেন, তাঁরা সকলে ভারতের নাগরিক। আপনারা এদেশেই থাকবেন।’’ প্রসঙ্গত, অসমে নাগরিক পঞ্জি ঘিরে এ রাজ্যে মতুয়াদের একটি বড় অংশের মধ্যে নাগরিকত্ব নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তৃণমূল ইতিমধ্যেই মতুযা সমাজের কাছে আশ্বাস দিয়েছে যে, নাগরিকত্বের প্রশ্নে তাদের পাশে রাজ্যের শাসক দল থাকবে। ঠাকুরনগর এলাকায় মতুয়া মহাসঙ্ঘের ‘বড়মা’ বীণাপাণি দেবীর পুত্রবধূ মমতা ঠাকুর এখন তৃণমূলের সাংসদ।
অপরপক্ষে তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের ছেলে শান্তনু বিজেপি ঘনিষ্ঠ। এ দিনের সমাবেশের অন্যতম উদ্যোক্তাও তিনি। বিজেপি নেতাদের লক্ষ্য ছিল নাগরিক পঞ্জি নিয়ে তৃণমূল যে ভাবে মতুয়াদের পাশে দাঁড়িয়েছে, তার মোকাবিলায় পাল্টা জমি তৈরি করা। তাই কৈলাস তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আপনাদের পাশে আছেন, আজ আমি আপনাদের কাছে এই বার্তাই দিতে এসেছি।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘যাঁরা বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং এ দেশে এসে অরাজগতা সৃষ্টি করছে নাগরিক পঞ্জি তৈরি করে তাঁদের তাড়ানো হবে।’’