অমিত শাহ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বদাই অভিযোগ করেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে তলায় তলায় বিজেপির সঙ্গে জোট করেছে সিপিএম এবং কংগ্রেস। যা তাঁর কথায় ‘জগাই-মাধাই-গদাই’ জোট। গত রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে রাজ্য বিজেপির বৈঠকে কার্যত সেই বিষয়টিই সামনে এল। ওই বৈঠকে রাজ্য নেতৃত্বের কেউ কেউ বলেন, পুরভোটে তৃণমূলকে হারাতে কোনও কোনও ওয়ার্ডে বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার চাহিদা রয়েছে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে। শাহ অবশ্য খাতায়-কলমে ওই রকম জোটের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, তৃণমূলকে হারাতে হবে নিজেদের জোরে। বাম-কংগ্রেসের সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তাদের সাহায্য করার শক্তিও নেই। মঙ্গলবার এ নিয়ে প্রশ্নে বিষয়টি স্বীকার করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘অমিত শাহের সামনে প্রসঙ্গটা উঠেছিল। কোনও কোনও ওয়ার্ডে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়ার কথা ভেবেছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু অমিতজি তা খারিজ করে দিয়েছেন।’’
যদিও বাম এবং কংগ্রেসও কোনও ভোটেই বিজেপির সঙ্গে কোনও রকম সমঝোতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূলের সঙ্গে সেটিং চলছে বিজেপির, তাই এত কেলেঙ্কারির পরেও তৃণমূল নেতারা জেলের বাইরে। আবার দিল্লির ঘটনার পরেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্তফা চাইছে না তৃণমূল। ওই দু’দলের সঙ্গে আমাদের আঁতাঁত, জোট বা বোঝাপড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। সবই আজগুবি গল্প!’’ প্রদেশ কংগ্রেসের পুরভোট সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক শুভঙ্কর সরকারও একই সুরে বলেন, ‘‘রাজনৈতিক ভাবে বিজেপি করোনা ভাইরাসের চেয়েও মারাত্মক! তাদের সঙ্গে কোনও সংস্রবের প্রশ্ন নেই!’’
তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পুর এবং পঞ্চায়েত ভোট হয় তৃণমূল স্তরে। সেখানে অনেক সময় সব দলেরই নিচু তলার কর্মীরা রাজ্য বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুশাসনের বাইরে গিয়ে স্থানীয় সমীকরণ মেনে নানা জোট করেন। দলের মতাদর্শের সঙ্গে সব সময় তা মেলে না।