সাংবাদিক বৈঠক করে প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করল রাজ্য বিজেপি নিজস্ব চিত্র
জল্পনা মতোই কলকাতা পুরভোটের প্রার্থিতালিকায় পুরনোদের উপরই ভরসা রাখল রাজ্য বিজেপি। পুরভোটের প্রার্থী করা হল মীনাদেবী পুরোহিত, সুনীতা ঝাওয়ারদের মতো দলের পুরনো কর্মীদের।
২২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হয়েছেন মীনাদেবী। এই বার জিতলে টানা ছ’বার কাউন্সিলর হবেন তিনি। গত বিধানসভা নির্বাচনে জোড়াসাঁকো কেন্দ্রের প্রার্থী ছিলেন মীনাদেবী। একই ভাবে ৪২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হয়েছেন বিজেপি-র পাঁচ বারের কাউন্সিলর সুনীতা ঝাওয়ার। ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী করা হয়েছে ইন্দিরা গঙ্গোপাধ্যায়কে।
তবে বিজেপি-র প্রার্থিতালিকায় সব চেয়ে নজরকাড়়া নাম ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে। প্রার্থী সজল ঘোষ। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে গিয়েছিলেন তিনি। গত ১২ অগস্ট মুচিপাড়া থানা এলাকায় একটি গোলমালে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হয়েছিলেন সজল। এর পরই গেরুয়া রাজনীতিতে নতুন করে খ্যাত হয়ে যান তিনি।
সজলকে প্রার্থী করলেও ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে রিঙ্কু নস্করকে প্রার্থী করল না বিজেপি। বিধানসভা ভোটের আগে সিপিএম থেকে বিজেপি-তে আসেন তিনি।
কলকাতা পুরভোটে যে প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করছে বিজেপি, সেখানে তরুণ মুখ ৪৫, মহিলা ৫০। আইনজীবী রয়েছেন পাঁচ জন, চিকিৎসক তিন জন, শিক্ষক চার জন।
কলকাতা পুরভোটে সবার আগে প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করেছিল বামফ্রন্ট। তার পর শাসকদল তৃণমূল। সবার শেষে প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করল বিজেপি।
রবিবার হেস্টিংস দফতরে কলকাতা পুরভোটের প্রার্থিতালিকা চূড়ান্ত করতে দুই প্রাক্তন রাহুল সিংহ এবং দিলীপ ঘোষকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছিল, এলাকায় ভাল পরিচিতি রয়েছে এবং দলের কাজে নিয়মিত— এমন নেতাদেরই প্রার্থী করার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল-সহ অন্য রাজনৈতিক দল থেকে বিজেপি-তে এসেছেন এমন কয়েকজন প্রার্থিতালিকায় জায়গা পেলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দলের পুরনো কর্মীরা প্রাধান্য পেয়েছেন। সোমবার দুপুরে প্রকাশিত প্রার্থিতালিকাতেও তা-ই দেখা গেল।
১৯ ডিসেম্বর কলকাতায় পুরভোট। ১ ডিসেম্বর, মানে আগামী বুধবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। তার আগে শনিবার দুপুর পর্যন্ত প্রার্থিতালিকা নিয়ে কোনও আলোচনাতেই বসেননি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার দুপুরেই প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করেছে বামেরা। রাতে শাসক দল তৃণমূল। কিন্তু রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি শিবিরে খুব একটা তাপ উত্তাপ দেখা যায়নি। বিজেপি-র অবস্থা দেখে অনেকেরই মনে হয়েছিল, এই পরিস্থিতিতে কলকাতা পুরভোটকে যেন ‘লড়তে হয় তাই লড়া’ হিসেবে নিয়েছে পদ্মশিবির। সোমবার প্রার্থিতালিকায় তেমন কোনও বড় চমক না থাকলেও অন্তত এর ফলে সমালোচকদের মুখ যে কিছুটা বন্ধ হবে, তা বলা যায়।