বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।—ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের ‘দিদিকে বলো’-র মোকাবিলায় এ বার ‘চা চক্রে দিলীপদা’ কর্মসূচি নিতে হচ্ছে বিজেপিকে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ বার এলাকায় এলাকায় ঘুরে চা চক্রে আলাপচারিতায় বসবেন স্থানীয় মানুষের সঙ্গে। তাঁদের সুখ-দুঃখ শোনার মধ্য দিয়ে করবেন জনসংযোগ। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, তৃণমূলের ‘দিদিকে বলো’-র ধাক্কা সামলাতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি।
দিলীপবাবুর অবশ্য দাবি, এটা কোনও মোকাবিলার কর্মসূচি নয়। জনসংযোগের এই রীতি তাঁর জীবনচর্যার অঙ্গ। দলের উৎসাহী কর্মীদের আগ্রহে তাকে একটা পোশাকি রূপ দেওয়া হচ্ছে মাত্র। গত দেড় মাসের সদস্য সংগ্রহ অভিযানে রাজ্যে ৭৭ লক্ষের বেশি সদস্য হয়েছে বলেও এ দিন জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপির তরফে বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে একটি প্রচারমূলক ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। তার ভাষা থেকেই স্পষ্ট— তৃণমূলের ‘দিদিকে বলোর’ পাল্টা হিসাবেই ‘চা চক্রে দিলীপদা’ কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। যেমন— ওই ভিডিওয় বলা হয়েছে, ‘‘কোনও লোক দেখানো ফোন কল নয়, কোনও ছেলে-ভোলানো চিঠিচাপাটি নয়, সরাসরি, সামনাসামনি, সোজাসাপ্টা অপ্রতিরোধ্য দিলীপ ঘোষ। চায়ের কাপ হাতে আজকের দিলীপদা একেবারে ঘরোয়া খোলামেলা নির্ভেজাল আড্ডার মেজাজে।’’
তৃণমূল অবশ্য মনে করছে, দিলীপবাবুর চা চক্রে বিজেপির কোনও লাভই হবে না। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রত্যাশা থাকলে তবেই মানুষ বলেন। তার জন্য মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অতীত থাকা দরকার। বিরোধী দলনেত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তা আছে। বিজেপির দাদাদের তা নেই। আগে সেটা তৈরি করুন!’’ তৃণমূলের ‘দিদিকে বলো’ কৃষকদের মধ্যে পৌঁছে দিতে আগামী মঙ্গলবার বিশেষ প্রচার কর্মসূচি নিয়েছে দলের কৃষক ও খেতমজুর সংগঠন।
অন্য দিকে দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘গত ২৫ বছর ধরে আমি এ ভাবেই মানুষের সঙ্গে মিশে সংগঠন করে চলেছি। রাতে যেখানেই থাকি, পর দিন সকালে সেখানেই কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে হাঁটতে বেরোই, পথে স্থানীয় মানুষের সঙ্গ গল্প করি, চা খাই।’’ একই সঙ্গে তাঁর পরামর্শ, ‘‘আমাদের অন্য নেতা-কর্মীরাও শুধু সেজেগুজে ইন্টারভিউ না দিয়ে এই পদ্ধতিতেই জনসংযোগ করুন।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার দিঘার রাস্তায় চায়ের দোকানে চা করে খাইয়ে জনসংযোগ করেছেন। তাকে কটাক্ষ করে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘চা তো আমাদের একচেটিয়া! উনি আবার ওটা করতে গেলেন কেন? এক জন চাওয়ালা থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আর এক জন মুখ্যমন্ত্রী থেকে চা বিক্রি করতে বসেছেন!’’ তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার মন্তব্য, ‘‘দিলীপবাবুদের নেতা চা বিক্রি করতেন বলে শোনা যায়। আমাদের নেত্রী নিজে হাতে চা করে মানুষকে খাওয়ান।’’