বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। —ফাইল চিত্র।
‘অশোক ভট্টাচার্য ভাল মানুষ। উনি বাড়িতে থাকলে চা খেতে যেতাম’- শুক্রবার সকালে নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) প্রচারে বার হয়ে এমন মন্তব্য করলেন দার্জিলিঙের বিজেপি’র সাংসদ রাজু বিস্তা। শিলিগুড়ির মেয়র তথা বিধায়ক অশোকবাবুর সুরে তিনি আরও জানান, শিলিগুড়িকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কলকাতার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুরসভা হওয়া সত্ত্বেও বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। রাজ্যের বঞ্চনার শিকার শিলিগুড়ি।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যে শিলিগুড়ি পুরসভা ভোট হওয়ার কথা। তার আগে বিজেপি সাংসদের এমন মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চর্চা। তৃণমূলের দাবি, রাম বাম একই সুরে চলার চেষ্টা করছে। সিপিএম আবার পাল্টা তোপ দেগেছে দুই দলকেই।
সাংসদ জানান, রাজ্যে সিপিএমের অস্তিত্ব সঙ্কটে। শিলিগুড়িতে অশোকদা দলকে ধরে রেখেছেন। কিন্তু শিলিগুড়ির প্রতি বঞ্চনা হচ্ছে। কলকাতার জন্য ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও শিলিগুড়ির জন্য খুবই কম। সাংসদের দাবি, শিলিগুড়ির জন্য এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা প্রয়োজন। কিন্তু প্রাপ্য থেকেও বঞ্চিত করছে রাজ্য। তাঁর কথায়, ‘‘আজকে আশোকদার বাড়িতে গিয়ে চা খাওয়ার ইচ্ছা ছিল। উনি না থাকায় হল না। পরেরবার শিলিগুড়িতে এসে মেয়রের সঙ্গে দেখা করব।’’
যা শুনে অস্বস্তিতে শিলিগুড়ির মেয়র অশোকবাবু বলেন, ‘‘আমার কোন দয়ার দরকার নেই। উনি এক জনপ্রতিনিধি আসতেই পারেন। আমার বাড়িতে চা খেয়ে যেতে পারেন। তাতে আমার কোনও আপত্তি নেই।’’ তিনি জানান, সাংসদ চেষ্টা করুন কেন্দ্র থেকে যাতে বঞ্চিত হতে না হয়। কেন্দ্র এবং রাজ্যের মাত্র ৬০ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে।
গত লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের বিজেপির জয়ের পর নানা কথা উঠেছিল। বাম ভোট রামে গিয়েছিল বলে দাবি করেছিল তৃণমূল। কিন্তু বিজেপি এবং সিপিএম তা অস্বীকার করে। এদিন সাংসদের মন্তব্যের পর ফের একবার লোকসভা ভোটের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘এতদিনে মুখোশ খুলেছে। অশোকবাবু ভোটে জিতিয়েছে আর তার ঋণ পরিশোধ করছেন রাজু বিস্তা। সিপিএম বিজেপি যে এক তা প্রমাণ হচ্ছে।’’
এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে দেশজুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। বিজেপি নেতারা নয়া আইনের সমর্থনে প্রচার শুরু করেছেন। এ দিন রাজু বিস্তা ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সূর্যনগর মাঠে প্রাতভ্রমণ করেছেন। পরে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলেশ্বরী বাজারে লিফলেট বিলি করেছেন কর্মীদের সঙ্গে।