বাঁ দিক থেকে নিশীথ প্রামাণিক, অর্জুন সিং ও সৌমিত্র খাঁ ফাইল চিত্র।
বুধবার সকালে বিজেপি-র তিন সাংসদ হঠাৎই দিল্লি গেলেন। তাঁরা হলেন অর্জুন সিং, নিশীথ প্রামাণিক এবং সৌমিত্র খাঁ। কিন্তু কেন তাঁরা দিল্লি গেলেন, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন বিজেপি-র অন্দরে। সূত্রের খবর, এই তিন সাংসদ যে দিল্লি যাচ্ছেন, তা সে ভাবে জানতেনই না রাজ্যনেতারা। রাজ্যের নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, দলকে জানিয়ে দিল্লি যেতে হবে, এমন কথা তো কোথাও বলা নেই। হতে পারে তাঁরা ব্যক্তিগত কোনও কাজে দিল্লি গিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, রবিবার রাতে দিল্লি গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার তিনি বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গে। বুধবার তাঁর সঙ্গে বৈঠক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। শুভেন্দুর দিল্লি সফরের কথা যে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও জানতেন না, তা প্রকাশ্যেই বলেছেন দিলীপ স্বয়ং। কলকাতায় তিনি বলেছেন, ‘‘শুভেন্দু কেন দিল্লি গিয়েছেন তা দিল্লির নেতারাই বলতে পারবেন।’’ এর পর বুধ-সকালে তিন সাংসদের দিল্লি যাত্রা নিয়ে বিজেপি-র একাধিক রাজ্যস্তরের নেতা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তাঁদের কিছু জানা নেই।
কাকতালীয় ভাবে শুভেন্দু দিল্লিতে থাকাকালীনই সেখানে গিয়েছেন রাজ্য বিজেপি-র ‘বিক্ষুব্ধ নেতা’ হিসাবে পরিচিত তথাগত রায়। মঙ্গলবার তিনিও নড্ডার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। একই সময়ে শুভেন্দু, তথাগত, অর্জুন, নিশীথ ও সৌমিত্রর দিল্লিতে থাকা কি একেবারেই সমাপতন না এর পিছনে কোনও নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে বিজেপি-তে। কেউ কেউ বলছেন শুভেন্দুর ডাকেই তিন সাংসদ দিল্লি গিয়েছেন।
মঙ্গলবার কলকাতায় রাজ্যের নেতাদের বৈঠকে মুকুল রায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি নিয়ে এমনিতেই অস্বস্তিতে বিজেপি। তার মধ্যেও এই আলাদা সফর তাঁদের আরও চিন্তায় ফেলতে পারে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবারের বৈঠকে বিধানসভা নির্বাচনে দলের নীতির বিরোধিতা করে সরব হয়েছেন অর্জুন। সম্প্রতি দলের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে দিয়েছেন সৌমিত্র। নিজের লোকসভা এলাকা বিষ্ণুপুরে দিলীপের বৈঠকও এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। নিশীথের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও গত কিছু দিন ধরে বিজেপি-র রাজ্য নেতাদের মধ্যে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের দিল্লি যাত্রা সেই সব প্রশ্নকে নতুন মাত্রা দিল।
তবে রাজ্য বিজেপি-র এক নেতার বক্তব্য, বাংলার ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করার কথা সাংসদদের। আরও অনেকেই চলতি সপ্তাহে যাবেন বলে তিনি শুনেছেন। তবে কবে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ, সে ব্যাপারে তাঁর কোনও ধারণা নেই। কিন্তু এই তিন জন কেন আচমকা চলে গেলেন, সে প্রশ্নের উত্তর কারও কাছে নেই।