(বাঁ দিকে) মহুয়া মৈত্র। নিশিকান্ত দুবে (ডান দিকে)। —গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।
লোকসভার এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকরকে লেখা মহুয়া মৈত্রর চিঠি নিয়ে এ বার কটাক্ষ করলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া যে চিঠি এথিক্স কমিটিকে দিয়েছেন, তাতে নিশিকান্তের পদবি ‘দুবে’র (Dubey) বদলে ‘দুবাই’ (Dubai) লেখা রয়েছে। তা নিয়েই মহুয়াকে কটাক্ষ করেছেন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগকারী নিশিকান্ত।
শুক্রবার মহুয়ার চিঠি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে বিজেপি সাংসদ লেখেন, ‘‘অভিযুক্ত সাংসদ দুবাইয়ের প্রতি এতটাই আসক্ত যে, এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যানকে লেখা চিঠিতে আমার নাম বদলে ‘দুবাই’ করে দেওয়া হয়েছে। এতে তাঁর মানসিক অবস্থার পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। হায় রে কপাল!’’
নিশিকান্ত যে অভিযোগ করেছেন তার মধ্যে অন্যতম হল, সংসদের ওয়েবসাইটে লগ ইন করার জন্য নিজের কোড এবং পাসওয়ার্ড দুবাইয়ের ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানিকে দিয়ে দিয়েছিলেন মহুয়া। ওই ব্যবসায়ী দুবাইয়ে বসে তার ‘সুযোগ’ নিয়েছেন। মহুয়া অবশ্য পাল্টা দাবি করেন, সমস্ত সাংসদের লগ ইন কোড এবং পাসওয়ার্ড প্রকাশ করা হোক। তা হলেই বোঝা যাবে, আরও কেউ ওই একই কাজ করেন কি না। নিশিকান্তের অভিযোগের মূল বিষয় ছিল মহুয়ার ‘দুবাই-যোগ’। হতে পারে, চিঠিতে ‘ভুল’ দেখেই খোঁচা দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেননি নিশিকান্ত।
আগামী ৩১ অক্টোবর তৃণমূল সাংসদ মহুয়াকে ডেকে পাঠিয়েছে লোকসভার এথিক্স কমিটি। বৃহস্পতিবার সেই চিঠি পাওয়ার পর শুক্রবার মহুয়া কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকরকে চিঠি লিখে জানান, ওই দিন তাঁর পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ তাঁর লোকসভা কেন্দ্রে বিজয় সম্মেলন রয়েছে। ৪ নভেম্বর পর্যন্ত পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে। ৫ নভেম্বরের পর যে কোনও দিন, যে কোনও সময়ে ডাকলে তিনি যেতে পারেন। বৃহস্পতিবার এথিক্স কমিটির বৈঠকে ডাকা হয়েছিল দুই অভিযোগকারী নিশিকান্ত ও মহুয়ার প্রাক্তন বন্ধু তথা আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাইকে। চিঠিতে মহুয়া এ-ও লেখেন, যে ভাবে অভিযুক্ত হিসাবে তাঁকে না ডেকে আগে দুই অভিযোগকারীকে ডেকে শুনানি করেছে এথিক্স কমিটি, তা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। ওই অংশেই নিশিকান্তের পদবি দুবের বদলে ‘দুবাই’ হয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার এথিক্স কমিটির বৈঠকে তীব্র বিতণ্ডা হয়। ঘণ্টাখানেক বন্ধ রাখতে হয় বৈঠক। কমিটির সদস্যেরা প্রশ্ন তোলেন, কেন আগে অভিযুক্তকে না ডেকে অভিযোগকারীদের ডাকা হল? বৈঠক হবে কি হবে না, তা নিয়ে ভোটাভুটিও হয়। ফল দাঁড়ায় ৫-৫। তার পর চেয়ারম্যান নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে বৈঠক শুরু করেন।
মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘টাকা ও উপহারের বিনিময়ে প্রশ্ন’ তোলার অভিযোগ জানিয়ে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত। পাশাপাশি, মহুয়ার প্রাক্তন বন্ধু জয় অনন্ত চিঠি দেন সিবিআই প্রধানকে। লোকসভার স্পিকার নিশিকান্তের সেই চিঠি পাঠিয়ে দেন এথিক্স কমিটিতে। বৃহস্পতিবার এথিক্স কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে বক্তব্য শোনা হয় নিশিকান্ত এবং জয়ের। দু’জনেই অভিযোগ করেছেন, দুবাইয়ের ব্যবসায়ী হীরানন্দানির কাছ থেকে ‘উপঢৌকন’ নিয়ে মহুয়া সংসদে শিল্পপতি গৌতম আদানি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জড়িয়ে প্রশ্ন তোলেন।