জন বার্লা। —ফাইল চিত্র
রাজ্য সরকারের সম্মতি ছাড়া চা বাগানের লিজ় চুক্তি হয় না। তার পরেও রাজ্যের কোনও প্রতিনিধিকে ছাড়াই এ দিন টি বোর্ড, উত্তরবঙ্গের চা বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। উদ্দেশ্য, বন্ধ বাগানগুলি খোলার ক্ষেত্রে সমাধানসূত্র খোঁজা। সেখানে তিনি টি বোর্ডেরই সমালোচনা করেন। তাঁর কথায়, টি বোর্ড এত দিন ভাল ভাবে কাজ করেনি বলে নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে। বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাঁরা যথাসম্ভব চেষ্টা করছেন।
টি বোর্ডকে কাজে লাগিয়ে চা বাগানে কেন্দ্রের ঢোকার চেষ্টা অবশ্য নতুন নয়। এর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বক্তব্যের সূত্র ধরে টি বোর্ডকে দিয়ে সাতটি রুগ্ণ চা বাগান অধিগ্রহণের চেষ্টাও হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আইনি জটিলতায় আটকে যায়। এ বারে বার্লাও রাজ্যকে বাদ রেখেই আলোচনায় বসলেন। একে একে নানা কারণে বন্ধ হয়েছে উত্তরবঙ্গের ১৪টি বাগান। ধুঁকছে আরও কয়েকটি। বার্লা ওই বৈঠকে অসন্তোষ প্রকাশ করে জানান, সেগুলির কারণ খতিয়ে দেখার ক্ষেত্রে টি বোর্ড যথাযথ ভূমিকা নেয়নি। আলিপুরদুয়ারের সাংসদ বার্লা এখনও চা বাগান শ্রমিক আন্দোলনের নেতা।
শিলিগুড়িতে টি অকশন কমিটির অডিটোরিয়ামের এই আলোচনাসভায় বার্লা বন্ধ বাগানগুলির সমস্যা কোথায়, তা নিয়ে নতুন করে খোঁজখবর করার পরামর্শ দিলেন বোর্ডের কর্মকর্তাদের। জন বার্লা বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় নানা সমস্যা রয়েছে, সেগুলি ভাল করে খতিয়ে দেখা দরকার। কিন্তু টি বোর্ড এত দিন ভাল ভাবে কাজ করেনি বলেই এই সমস্যা। টি বোর্ড নিয়মিতভাবে রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠালে এই সমস্যা হত না।’’ বিভিন্ন স্কিমে চা বাগানগুলির প্রাপ্য প্রায় ১২৪ কোটি টাকা। সেখানে এ বারে মাত্র ৮৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে বার্লা প্রশ্ন তোলেন। বলেন, ‘‘মাত্র ৮৫ কোটি টাকা রুগণ চা বাগানগুলিতে দিয়ে কী হবে?’’ জনের আশ্বাস, সমস্যার কথা অর্থ মন্ত্রকের কাছে বাজেটের আগে পেশ করবেন।
টি বোর্ডের কর্তাদের দাবি, বন্ধ চা বাগান খোলার জন্য তাঁরা বারবার নানা চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন প্রকল্পে বাগানগুলিকে আর্থিক সাহায্যের জন্যও কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের কাছে দরবার করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় টি বোর্ডের ডেপুটি চেয়ারম্যান অরুণকুমার রায় বলেন, ‘‘আমরা যথাসম্ভব চেষ্টা করছি বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিতে। তবে চা বাগানগুলিকে নিজের মতো করে আয় বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।’’
রাজ্যের সম্মতি ছাড়া যেখানে চা বাগানের লিজ় চুক্তি হয় না বা শ্রমিক সমস্যার সমাধানে রাজ্যের শ্রম কমিশনার ছাড়া মধ্যস্থতা বৈঠক হয় না, সেখানে এ দিনের বৈঠকে রাজ্য সরকারের কোনও প্রতিনিধি না থাকাটা সকলেরই চোখে
পড়েছে। এ দিনের বৈঠকে অবশ্য ছিলেন না দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তাও।