মুকুল রায়কে তোপ দিলীপ ঘোষের। — ফাইল চিত্র।
বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বকে ধোঁকা দিয়েছেন মুকুল রায়। তিনি দলের কর্মীদের মনোবল ভেঙে দিয়েছেন। মুকুলের বিজেপিতে প্রত্যাবর্তন নিয়ে জল্পনার মধ্যে এমন মন্তব্যই করলেন পদ্ম-সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার দিলীপ আদালতে একটি মামলায় জামিন নিতে গিয়েছিলেন হুগলির চুঁচুড়ায়। সেখানে এমনটাই বলেন তিনি।
সোমবার রাতে আচমকাই দিল্লি পৌঁছন মুকুল। তাঁর পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে অপহরণের তদন্ত শুরু করে রাজ্য পুলিশ। এই আবহে মঙ্গলবার রাতে মুকুল নিজেই জানিয়ে দেন, শরীর ভাল না থাকার কারণে তিনি কিছু দিন পুরো মাত্রায় রাজনীতি করতে পারেননি। এখন শরীর সুস্থ হওয়ায় তিনি অমিত শাহজি, নড্ডাজি (বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা)-র সঙ্গে কথা বলবেন। তেমন পরিস্থিতি হলে তিনি যে আবার বিজেপি করতে পারেন সে কথাও জানিয়েছেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক। যদিও শুভ্রাংশু দাবি করেছেন, তাঁর বাবা পুরোপুরি সুস্থ নন। কিন্তু মুকুলের দিল্লিযাত্রা এবং সেই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য— এই ঘটনাক্রম বিজেপিতে ফিরে যাওয়ার জল্পনা উস্কে দিয়েছে। তা নিয়ে বৃহস্পতিবার দিলীপ বলেন, ‘‘আগে ওঁরা বাপ-ব্যাটা ঠিক করে নিন কে ঠিক বলছেন। তৃণমূলে গেলে অনেকের অক্সিজেন কমে, কারও সোডিয়াম, পটাশিয়াম, কারও হাইড্রোজেন কমে। কার কী কমেছে সেটা চিকিৎসকরা বলবেন।’’ এই সূত্রেই দিলীপের সংযোজন, ‘‘আমাদের দলে আসার পর এবং তাঁকে সম্মান দেওয়ার পরে সর্বভারতীয় নেতৃত্বকে উনি যে ভাবে ধোঁকা দিয়েছেন, আমাদের কর্মীদের মনোবলকে যে ভাবে ভেঙে দিয়েছেন তাতে আমাদেরও ক্ষতি হয়েছে এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিরও অনেক ক্ষতি হয়েছে। উনি কী বলছেন তাতে কী যায়-আসে? ওঁর না ছেলের, কার কথা মানব আমরা?’’
দিলীপের মত, ‘‘অনেক দিন একঘেয়েমি লাগছিল বসে বসে, একটু দিল্লি বেড়াতে গিয়েছেন, হতেও পারে। উনি (মুকুল) পুরনো সাংসদ, মন্ত্রী ছিলেন, যেতেও পারেন। এখন কী বলছেন না বলছেন, তার কী মানে হয়, সেটা আমরা বুঝতে পারছি না। এই ধরনের নেতাদের কথার অনেক মানে হয়। যাঁদের অভিজ্ঞতা আছে তাঁরা জানেন, এর কী মানে।’’
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন মুকুল। এর পর ওই বছরের জুনেই তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। তার পর থেকে মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে কখনও বিধানসভার স্পিকার, কখনও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। তা নিয়ে এখনও অব্যাহত টানাপড়েন।