বুধবার বাইরনকে শপথবাক্য পাঠ করান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
কংগ্রেস বিধায়কের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ধরা পড়ল সৌজন্যের ছবি। বুধবার বিধানসভায় নৌশার আলি কক্ষে সাগরদিঘি উপনির্বাচনে জয়ী কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস শপথ গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শেষে বিজেপির ৩ বিধায়ক হলুদ গোলাপের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান নবনির্বাচিত বিধায়ককে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, জাতীয় রাজনীতিতে ‘আদায় কাঁচকলায়’ সম্পর্কে থাকা কংগ্রেস-বিজেপির বিধানসভায় পারস্পরিক সৌজন্য বিনিময় নিয়ে! কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, ‘‘সাগরদিঘিতে বিজেপির লোক কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়ে বামফ্রন্টের সমর্থনে জিতেছে।’’
বুধবার বাইরনকে শপথবাক্য পাঠ করান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুষ্ঠানে শাসকদলের নেতাদের সঙ্গে আমন্ত্রিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ব্যস্ততার কারণে তিনি শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আসতে পারেননি। ৩ বিজেপি বিধায়ক ছিলেন অনুষ্ঠানে। চাকদহের বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ, কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায় ও গঙ্গারামপুরের বিধায়ক সত্যেন রায়কে বাইরনের শপথের অনুষ্ঠানে পাঠিয়েছিল বিজেপি পরিষদীয় দল।
তবে এ প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন চাকদহের বিজেপি বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় স্তরে কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট তথা সিপিএমের সঙ্গে আমাদের যেমন রাজনৈতিক লড়াই রয়েছে তেমন থাকবে। নীতিগত প্রশ্নে তাদের সঙ্গে আমাদের আপস হতে পারে না। কিন্তু বর্তমানে রাজ্যে তৃণমূল পরিচালিত যে সরকার রয়েছে কোনও নীতি না মেনে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে। সেই প্রশ্নে আমরা সব বিরোধী দলই এক সুরে কথা বলতে পারি।’’ বঙ্কিম আরও বলেন, ‘‘অনেক সময় আমাদের সঙ্গে কংগ্রেস ও সিপিএমের তৃণমূল বিরোধিতার সুর মিলে যেতেই পারে। তা বলে আমরা এক হয়ে গিয়েছি এমনটা ভাবা সমীচীন নয়। ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিও নীতিগত ভাবে আমাদের বিরোধী, কিন্তু বিধানসভায় তিনিও এমন অনেক ইস্যুতে সরব হন যা নিয়ে আমরাও প্রতিবাদ জানাই। তাই জাতীয় স্তরে যেমন কংগ্রেস ও সিপিএমের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই যেমন ছিল তেমনটাই থাকবে।’’ আর যাকে বিজেপি বিধায়করা অভিনন্দন জানিয়েছেন, সেই বাইরন বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে একসঙ্গে পথ চলা কখনওই আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সৌজন্য বিনিময় হতেই পারে। আমি বামফ্রন্টের সমর্থনে কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে জিতেছি, তাই বিধানসভায় তৃণমূল ও বিজেপি দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই আমি সরব হব।’’
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়েও যোগ দেননি, পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় শাসকদলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ ও উপমুখ্যসচেতক তাপস রায়। রাজ্য সরকারের পক্ষে প্রতিনিধি হিসাবে একমাত্র উপস্থিত ছিলেন পরিষদীয় দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যারানী টুডু।