মঞ্চ বেঁধে যাত্রা শুরু বুথে

‘বুথতীর্থ যাত্রা’ কর্মসূচিতে পুরুলিয়ার ন’টি বিধানসভার ২,৪৯১টি বুথের সব ক’টিতেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। এই কর্মসূচির ভাবনার পুরোটাই জেলা নেতৃত্বের। দল সূত্রের খবর, জেলার সমস্ত বুথে যাবেন নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৪৩
Share:

প্রবীণদের সংবর্ধনা দিচ্ছেন বিজেপি সাংসদ। নিজস্ব চিত্র

পুজোর মরসুম মিটতেই জেলায় ‘বুথতীর্থ যাত্রা’ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিজেপি। সেই মতো, ছট মিটতেই রবিবার আনাড়া গ্রামে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল। এ দিন পঞ্চায়েতের সামনের মাঠে হয়েছে ‘বুথতীর্থ যাত্রা’ কর্মসূচি। ছিলেন দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী, পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো ও অন্য নেতারা। এ দিন মঞ্চ তৈরি করে অনুষ্ঠান হয়েছে। বিদ্যাসাগরবাবু বলেন, ‘‘কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন বলেই বড় করে অনুষ্ঠান করেছি আমরা। পরে অন্য বুথে মূলত গ্রাম বৈঠকের মাধ্যমেই জনসংযোগ করবেন দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা।”

Advertisement

‘বুথতীর্থ যাত্রা’ কর্মসূচিতে পুরুলিয়ার ন’টি বিধানসভার ২,৪৯১টি বুথের সব ক’টিতেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। এই কর্মসূচির ভাবনার পুরোটাই জেলা নেতৃত্বের। দল সূত্রের খবর, জেলার সমস্ত বুথে যাবেন নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা। যেখানে বিজেপির সদস্য জিতেছেন সেখানে এলাকার বাসিন্দাদের পরামর্শ অনুযায়ী এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে। আনাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে এ বার জিতেছে বিজেপি। আবার ওই পঞ্চায়েতেরই বাসিন্দা দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগরবাবু। কিছুটা প্রত্যাশিত ভাবেই ‘বুথতীর্থ যাত্রা’ শুরুর জন্য পাড়া বিধানসভার এই পঞ্চায়েতকে বেছে নিয়েছিল দল।

বিদ্যাসাগরবাবু জানান, এই কর্মসূচিতে তাঁরা বুথের বয়স্ক লোকজনদের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ দিন কর্মসূচির শুরুতেই এলাকার শতাধিক বয়স্ক বাসিন্দাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এলাকার উন্নয়নে তাঁদের পরামর্শ শোনা হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আনাড়া গ্রামের ষাটোর্ধ্ব চণ্ডীচরণ চক্রবর্তী, বাহাদুর বাগদি, হারাধন দেওঘরিয়া, কাজল বাগদিরা আনাড়া গ্রামের মধ্যে সৌরবিদ্যুৎচালিত পথবাতির ব্যবস্থা করার কথা বলেন। বাগদী পাড়ায় নিকাশি ব্যবস্থা তৈরি করার দাবি ওঠে। এলাকার পুকুরে স্নানের জন্য পাকা ঘাট তৈরি, গ্রামের শিবমন্দিরের সামনে শৌচালয় তৈরির পরামর্শও উঠে আসে। মহাদেবপুরের বাসিন্দা যুবক অম্বিকা বাউড়ি আবার তাঁদের গ্রামে পানীয় জল ও আলোর সমস্যার কথা তুলে বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিজেপি কর্মীদের দাবি ও পরামর্শগুলি উঠে আসার সময়ে লিখে নিতে দেখা গিয়েছে।

Advertisement

পঞ্চায়েতের সামর্থ্য মতো তাঁরা এই দাবি ও পরামর্শগুলি রূপায়িত করার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যাসাগরবাবু। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের আর্থিক ক্ষমতা বেশি থাকে না। আমরা প্রধানকে বলেছি, যে সমস্যা ও পরামর্শ উঠে এসেছে সেগুলি পঞ্চায়েতের বার্ষিক পরিকল্পনার মধ্যে ধরে রূপায়িত করতে হবে।” সৌরবিদ্যুতে জ্বলা পথবাতির জন্য সাংসদকে তাঁর এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ করার জন্য পঞ্চায়েত থেকে অনুরোধ করা হবে বলে এ দিন জানানো হয়েছে।

বুথ তীর্থ যাত্রা রাজনৈতিক কর্মসূচি নয় বলে বিজেপি দাবি করলেও এ দিন মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময়ে উন্নয়নের কাজ নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারকে বিঁধেছেন বিজেপির সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোয়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি এই রাজ্যে রূপায়নে বাধা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। ফলে বাসিন্দারাই উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।” তবে বিজেপির সাংসদের অভিযোগ উড়িয়ে পাড়ার তৃণমূল বিধায়ক উমাপদ বাউড়ি বলেন, ‘‘পুরুলিয়ার অনেক পঞ্চায়েতেই বিজেপি জিতেছে। কিন্তু তার পরেও ওরা এলাকার উন্নয়নের কাজ করতে ব্যর্থ হয়ে এখন লোক দেখানো নাটক শুরু করেছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement