২০১৬ সালে সামনে এসেছিল নারদা-কাণ্ড।
রাজ্যে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআই তদন্তে নেমেছে। এই পরিস্থিতিতে বারবার শাসকশিবির শুভেন্দু অধিকারীর দিকে আঙুল তোলে। সারদা, নারদাকাণ্ড তো বটেই আরও বিভিন্ন মামলায় তাঁকে নিয়মিত কাঠগড়ায় তোলে তৃণমূল। সেই সঙ্গে অভিযোগ করা হয়ে বিজেপি ‘ওয়াশিং মেশিন’। শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ায় সব তদন্ত থেকে ছাড় পাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সেই প্রসঙ্গ উঠতেই শুভেন্দু তাঁর সাংবাদিক বৈঠকে নারদকাণ্ড প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ও সব দিয়ে কিছু হবে না। আমাকে তো ডেকেছিল। বলে এসেছি, ভাইপো করিয়েছে কে ডি সিংহকে দিয়ে। ওটা করাপশন (দুর্নীতি) নয়, কনস্পিরেসি (ষড়যন্ত্র)। গিয়ে বলে এসেছি। তাই আর ডাকে না!’’ বৃহস্পতিবার শুভেন্দু তৃণমূলের চার নেতার বিরুদ্ধে হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগ তুলেছেন। সেই সংক্রান্ত নথি দেখিয়ে জানিয়েছেন তা তিনি ইডির কাছেও জমা দেবেন। সেখানেই ওঠে নারদ-কাণ্ডের প্রসঙ্গ। শুভেন্দু তখন জানান, তাঁর বিরুদ্ধে খবরের কাগজ নেওয়া ছবি ছাড়া কোনও কিছু প্রমাণ করতে পারেননি। প্রসঙ্গত, নারদের গোপন ক্যামেরা অভিযানে দেখা গিয়েছিল, শুভেন্দু খবরের কাগজে মুড়ে টাকা নিচ্ছেন। যা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তো বটেই এবং তৃণমূলের অন্য নেতারা নিয়মিত বলে থাকেন। এই তদন্তে অতীতে জেরার মুখেও পড়তে হয়েছিল শুভেন্দুকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে আগে প্রকাশ্যে আসে নারদ-কাণ্ড। নারদের তোলা গোপন ভিডিয়োয় (যা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি) তৃণমূলের নেতা-নেত্রী-পুলিশ অফিসারদের টাকা নিতে দেখা যায়। আদালতের নির্দেশে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। তখন শুভেন্দু তৃণমূলে ছিলেন। সেই সময়ে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, ম্যাথু স্যামুয়েলের থেকে টাকা নেওয়ার পরেই নির্বাচন সংক্রান্ত অ্যাকাউন্ট খোলেন তিনি। কথোপকথনের যে ফুটেজ মিলেছে, তাতে ম্যাথু নির্বাচনের জন্য টাকা দিচ্ছেন বলে উল্লেখ রয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি।
গত বিধানসভা নির্বাচনের পরে পরে এই মামলায় সিবিআই গ্রেফতার করেছিল তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এর পরে গত জুন মাসেই সারদা-নারদ মামলায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকে গ্রেফতারের দাবিতে রাজ্যপালের কাছে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সম্প্রতি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারের পরেও তৃণমূল শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি তোলে। বৃহস্পতিবার সেই সব অভিযোগেরই জবাব দিলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অন্য অভিযোগেরও জবাব দেন শুভেন্দু। বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোনও অভিযোগই প্রমাণ করতে পারেনি। পাসপোর্টে দাগই নেই আমার।’’ সারদাকাণ্ডে তাঁকে জড়াতে সুদীপ্ত সেনকে দিয়ে চিঠি লেখানো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।