মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
প্রত্যাশিত ভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক এড়িয়ে গেলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল তাঁর। রাজ্যের মানবাধিকার কমিশনের সদস্যের নাম ঠিক করতে এই বৈঠকে যোগদানের জন্য নবান্ন থেকে আমন্ত্রণ গিয়েছিল বিরোধী দলনেতার দফতরে। কিন্তু বৈঠক শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে বৈঠকে না যাওয়ার কথা জানিয়ে দেন শুভেন্দু।
বৈঠকে যোগদান না করার কারণ হিসাবে তিনটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। প্রথম কারণ হিসাবে জানানো হয়েছে, “এই বৈঠক আসলে ‘লোকদেখানো’র মতো বিষয়, কারণ এখানে নিজেদের পছন্দ মতো ব্যক্তিকে বসানোর সিদ্ধান্ত আগেই নিয়ে নেওয়া হয়েছে। যাঁদের মধ্যে বেছে নেওয়ার কাজ হবে, সেই তালিকায় রয়েছেন মাত্র তিন জন। সেই তালিকায় এমন এক জন রয়েছেন, যিনি মুখ্যমন্ত্রীর চোখের মণি। যাঁকে পশ্চিমবঙ্গের তথ্য কমিশনার নিয়োগ করা হয়েছিল। এ বার তাকে পুর্নবাসন দিয়ে রাজ্যের মানবিধাকার কমিশনের চেয়ারম্যান পদে বসানো হচ্ছে।” উল্লেখ্য, রাজ্যের মুখ্যসচিব ছিলেন বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে শুভেন্দু তাঁর কথাই বলেছেন।
দ্বিতীয় কারণ হিসাবে রাজ্যে একের পর এক ঘটে চলা ঘটনায় মানবাধিকার কমিশনের নিষ্ক্রিয় থাকার কথা উল্লেখ করেছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর কথায়, “২০২১ সালের ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনার সময় রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণ করে দিয়েছে এটি একটি অকেজো সংগঠন। এ ছাড়া বগটুই গণহত্যা, এগরার বোমা বিস্ফোরণ, জয়নগরের ঘটনা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার ঘটনায় রাজ্য সরকারকে সন্তুষ্ট করার জন্যই কাজ করেছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন।” এমনই মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলনেতা।
তৃতীয় কারণ হিসাবে তিনি লিখেছেন, “রাজ্য মানবাধিকার কমিশন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সরকারকে যখন কোনও দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হয়, তখন সরকারের হয়ে কাজ করতে তাদের নামানো হয়।” এমনই সব অভিযোগ করে, পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশনকে সরকারের হাতের পুতুল বলে আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। এই তিন কারণ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক বয়কট করবেন বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু।
গত আড়াই বছরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মুখোমুখি কোনও বৈঠকে বসেননি শুভেন্দু। যত বার এই ধরনের কোনও বৈঠকে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তখনই সেই বৈঠক এড়িয়েছেন বিরোধী দলনেতা। এ বারের বৈঠকেও একই পন্থা অবলম্বন করলেন তিনি।