শুভেন্দুর টুইট নিয়ে আক্রমণ কুণালের। ফাইল চিত্র
কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নামবদল নিয়ে তিনি দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন। সে সব অভিযোগ যে সত্যি, এ বার সেই দাবিও করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার একটি ভিডিয়ো টুইট করে শুভেন্দু দাবি করেছেন, গত দেড় বছর ধরে তিনি যে অভিযোগ তুলে আসছেন তা সত্যি বলে প্রমাণিত। শুভেন্দুর টুইট করা ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে রাস্তার ধারে একটি ফলকে লাগানো কাগজে ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা’ লেখা রয়েছে। এর পরেই কোনও এক ব্যক্তি ওই কাগজটি ছিঁড়ে ফেলছেন। তার পরেই দেখা যাচ্ছে, ফলকে ‘বাংলা গ্রাম সড়ক যোজনা’ লেখা।
এই ভিডিয়ো প্রকাশ করে শুভেন্দু রাজ্যকে ‘স্টিকার’ সরকার বলে আক্রমণ করেছেন। দাবি করেছেন, অনৈতিক ও অবৈধ ভাবে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নামবদল করা হচ্ছে। শুভেন্দু দাবি করেছেন, কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দলের এক প্রতিনিধিই ফলক থেকে ওই কাগজটি খুলে দিয়েছেন। শুভেন্দুর এই টুইট নিয়ে আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘প্রকল্পগুলি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। শুধু কেন্দ্রের টাকায় ওই প্রকল্পগুলি হয় না। রাজ্যও টাকা দেয়। আর শুভেন্দু যত দিন রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন তিনিও তো এটা সমর্থন করতেন। এখন যদি কেউ গিরগিটি হয় তবে কে কী বলবে!’’
বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নামবদল করে রাজ্য সরকার বাস্তবায়িত করছে বলে অনেক দিন ধরেই অভিযোগ তুলে আসছে বিজেপি। এ নিয়ে বেশি সরব শুভেন্দু। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, শনি ও রবিবার হায়দরাবাদে হওয়া দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকেও এই প্রসঙ্গে অভিযোগ জানান তিনি। তার আগে গত ২১ এপ্রিল উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনার নামে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চিঠি লিখে নালিশও করেন। অভিযোগ ছিল, তিনটি কেন্দ্রীয় প্রকল্প— প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, স্বচ্ছ ভারত এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার নাম যথাক্রমে বাংলা আবাস যোজনা, মিশন নির্মল বাংলা এবং বাংলা গ্রামীণ সড়ক যোজনা বলে উল্লেখ করে বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। এটাকে ‘ইচ্ছাকৃত এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেও দাবি করেন শুভেন্দু।
সম্প্রতি রাজ্যকে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, আবাস যোজনায় প্রধানমন্ত্রীর নাম যুক্ত না করলে কেন্দ্র এই প্রকল্পে আর টাকা দেবে না। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের পক্ষে এই মর্মে নবান্নকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে। অন্য দিকে, এই বিতর্কে সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। গত সপ্তাহেই বর্ধমানে একটি অনুষ্ঠানে মমতা বলেন, ‘‘বাংলার বাড়ি, বাংলার সড়ক যোজনার টাকা আটকে রাখা হচ্ছে। আমি সাংসদদের একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিলাম (দিল্লিতে), দেখি তার পরে কী করে। তা না হলে আমাকেও দিল্লি যেতে হতে পারে। এগুলোর সমাধান করতে হবে।’’