রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র ।
অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ‘সংহতি মিছিল’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন, তা পিছিয়ে দেওয়া হোক। কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে এমনটাই আবেদন জানালেন শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি, আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ওই দিন রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার আর্জিও জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। আদালতে শুভেন্দুর যুক্তি, এর আগেও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হয়েছে। তাই রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিন অর্থাৎ, ২২ জানুয়ারি কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তাই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার প্রয়োজন রয়েছে। ওই একই কারণে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচিও পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি আদালতে জানিয়েছেন তিনি। মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে বিচারপতি হরিশ টন্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ।
উল্লেখযোগ্য, আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন। আর সেই মন্দির উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে দেশ জুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে বহু মানুষ ইতিমধ্যেই অযোধ্যায় ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধনের দিন ‘রামলালা’র মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
রামমন্দির উদ্বোধনকে ‘ভোটের আগে গিমিক’ বলে আগে কটাক্ষ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তবে মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা ওই দিনেই পাল্টা কর্মসূচির ডাক দেন। সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, ‘‘ওই দিন হাজরা থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত সংহতি মিছিল হবে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে সর্বধর্মের প্রতিনিধিদের নিয়ে ওই কর্মসূচি করব।’’ সেই কর্মসূচিকে মমতা ‘সংহতি মিছিল’ বলেও উল্লেখ করেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২২ জানুয়ারি হাজরা মোড় থেকে শুরু হবে ‘সংহতি মিছিল’। তার পর তা যাবে পার্ক সার্কাস ময়দানে। শুধু কলকাতা নয়, তৃণমূলের সর্বময় নেত্রীর নির্দেশ, ওই দিন সব জেলায়, সব ব্লকে সংহতি মিছিল করতে হবে। তবে মমতা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ‘সংহতি মিছিল’ কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচি নয়। মূলত ‘সংহতি’র বার্তা দিতেই এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন তিনি।
মমতা মঙ্গলবার এ-ও জানিয়েছেন, ২২ জানুয়ারি হাজরা মোড় থেকে মিছিল শুরুর আগে কালীঘাট মন্দিরে যাবেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘মা কালীকে ছুঁয়ে, মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার, গির্জা ছুঁয়ে, সব ধর্মের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এই মিছিল করব।’’ দলের পাশাপাশি বৃহত্তর নাগরিক সমাজকেও শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী।
ইতিমধ্যেই হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠন রামমন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে। তৃণমূলের বক্তব্য, গেরুয়া শিবির বিভাজনের উদ্দেশ্যে রাস্তায় নামতে চেষ্টা করবে। তৃণমূল পাল্টা মিছিল করবে সংহতির বার্তা নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর সেই কর্মসূচি পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েই এ বার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু।