রাজ্য বিজেপির ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল। ফাইল চিত্র।
রাজ্য বিজেপির ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল প্রথম বার বঙ্গ সফরে এসেই দল ভাঙানোর ‘কৌশল’-এর পক্ষে সওয়াল করলেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলায় এসে বলে গিয়েছিলেন, যে-কোনও মূল্যে দলকে বড় করতে হবে। সেই কারণে অন্য দল থেকে আসা নেতাদের গুরুত্ব দিয়ে দলে জায়গা দিতে হবে। বিজেপির প্রশিক্ষণ শিবিরের দ্বিতীয় দিনে সেই সুর শোনা গেল বনসলের গলায়।
তবে এই কৌশল নিয়ে দলকে অস্বস্তিতেও পড়তে হয়েছে। প্রথম দিন থেকেই আদি-নব্য টানাপোড়েন বারবার মাথাচাড়া দিয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হওয়ায় অনেকেই পুরোনো দিলে ফিরে গিয়েছিলেন। অবশ্য সেই সময় তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী দলে যথেষ্ঠ গুরুত্ব পেয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এদিন শিবিরে তিনি বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বুথ শক্তিশালী করতে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের প্রতি অনুগতদেরই প্রার্থী করতে হবে।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকাল ৬টায় যোগব্যায়ামের মাধ্যমে দ্বিতীয় দিনের শিবির শুরু হয়। এর পরে প্রতিনিধিরা সঙ্ঘের বিভিন্ন আসরে প্রচলিত খেলাগুলি নিজেদের মধ্যে খেলেন। কয়েক জন সাঁতার কাটেন। এর পর শিবিরের কাজ শুরু হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সতীশ ধন্ড, আরএসএস নেতা জলধর মাহাতো, শুভেন্দু ও বনসল।
গেরুয়া শিবিরের অন্দরের খবর, এ দিন সংগঠন-পর্বে আলোচনা করতে গিয়ে বনসল জানান, দলকে বড় করতে হবে। অন্য দল থেকে কেউ এলে তাঁকে সম্মান দিয়ে দলে নিতে হবে। দলকে চুম্বকের মত তৈরি করুন। যাতে মানুষ আকৃষ্ট হয়। সেই সঙ্গে দলকে ঐক্যবদ্ধ করার বার্তাও দিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, প্রতিদিন নতুন নতুন ঝামেলা করবেন না নিজেদের মধ্যে। দলকে ঐক্যবদ্ধ করুন।
তিন মন্ত্রী-সহ ৬ সাংসদের অনুপস্থিতির কারণ নিয়েও আলোচনা চলেছে শিবিরে। অনুপস্থিতি নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে এ দিন ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম বলেন, “আমি তো রাজস্থানে। ‘স্ট্যান্ডিং কমিটি অন কোল, স্টিলস অ্যান্ড মাইনস’-এর সদস্য হিসেবে পরিদর্শন ও বৈঠকের জন্য উদয়পুরে আছি। বুধবার বিকেলে মুম্বইয়েও কমিটির বৈঠক আছে।”
এই নিয়ে রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “আমাদের শিবিরে কে আসবে, কে আসবে না, কেন আসবে না, সেটা আমার বিষয়। আমাদের এই নিয়ে তথ্য আছে। আমরা প্রকাশ্যে এই নিয়ে কিছু বলব না।”