গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্যে করার দাবি নিয়ে অনেক শিবির থেকেই প্রস্তাব এসেছে বিভিন্ন সময়ে। বিজেপির ভিতরেও এমন দাবি উঠেছে। তবে দলের পক্ষে এমন কোনও পরিকল্পনা নেই বলেও বারংবার জানিয়েছে পদ্মশিবির। এ বার রাজ্য ভাগ না করেই উত্তরবঙ্গের আট জেলাকে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে যুক্ত করার দাবি তুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। বুধবার এ নিয়ে একটি প্রস্তাবও তিনি জমা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে। সেখানে বাংলার উত্তরাংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির অনেক মিলের দাবি জানিয়ে উন্নয়নের ক্ষেত্রে কাজের সুবিধা হবে বলেও লিখেছেন সুকান্ত।
বৃহস্পতিবার দিল্লি সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হতে পারে বলেও জল্পনা। তার আগে বুধবার মোদীর সঙ্গে সুকান্তের বৈঠক হয়। সেখানে বাংলার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও তিনি মোদীর সঙ্গে কথা বলেন। সেই সঙ্গে উত্তরবঙ্গ সংক্রান্ত প্রস্তাব জমা দেন। এ নিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন এত দিন ঠিক ভাবে হয়নি বলেই বারংবার বিভিন্ন দাবি ওঠে। এখন প্রধানমন্ত্রী উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। সে জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দও রয়েছে। ফলে উত্তরবঙ্গকে নতুন মর্যাদা দিলে উন্নয়নে গতি আসবে।’’ সুকান্তের এটাও দাবি যে, ‘‘এর ফলে রাজ্য সরকারের কোনও আপত্তি থাকবে না বলেই মনে করি। কারণ, আদতে রাজ্যেরই উন্নতি হবে।’’ যদিও তৃণমূলের পক্ষে এমন দাবিকে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এ সব বাজে কথা। আসলে ভোটে বিপর্যয়ের দায় নিজের ঘাড় থেকে সরিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর উপরে চাপাতেই মোদীর কাছে গিয়েছিলেন। যাঁরা বাংলার প্রাপ্য টাকার দাবিকে সমর্থন করে না, বাংলাকে বঞ্চিত করার পক্ষে তাঁরা কোনও ভাবেই রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কিছু চাইতেই পারে না।’’
প্রসঙ্গত, সুকান্ত শিক্ষা মন্ত্রকের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন মন্ত্রকেরও প্রতিমন্ত্রী। এই মন্ত্রকের পূর্ণমন্ত্রী জ্য়োতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তবে মোদীর কাছে প্রস্তাব নিয়ে একা সুকান্তই গিয়েছিলেন। এ থেকেই মনে করা হচ্ছে নিজের দফতরের এলাকা বাড়ানোর লক্ষ্যেই সুকান্তের এই উদ্যোগ। তাঁর লোকসভা এলাকা বালুরঘাটও উত্তরবঙ্গে। সেই দিক থেকে তাঁর মন্ত্রকের অধীনে উত্তরবঙ্গকে আনতে পারলে নিজের এলাকার উন্নয়নেও কাজ করতে পারবেন সুকান্ত।