শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদার। — ফাইল চিত্র।
দিল্লিতে শনি ও রবিবারে বিজেপির ‘রাষ্ট্রীয় অধিবেশন’-এ দেখা যায়নি শুভেন্দু অধিকারীকে। পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতাকে দেখতে না পাওয়া নিয়ে বিজেপির অন্দরে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছিল। রবিবার সেই খবর প্রকাশ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। সোমবার বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানিয়ে দিয়েছেন, অধিবেশনে গরহাজির থাকার জন্যই শুভেন্দুকে দেখা যায়নি। সুকান্ত দিল্লিতে তাঁর সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘কিছু ব্যক্তিগত কারণে শুভেন্দুদা দিল্লিতে আসতে পারেননি। সেই সঙ্গে সন্দেশখালি নিয়ে আদালতের বিষয়টাও ছিল।’’ এ নিয়ে শুভেন্দুর সঙ্গে সোমবার সকালে তাঁর কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুকান্ত।
শুভেন্দু দিল্লির অধিবেশনে গিয়েছেন কি যাননি, তা নিয়ে কোনও কোনও মহল থেকে বিবিধ দাবি করা হচ্ছিল। অনেকেই দাবি করছিলেন, শুভেন্দু অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে তাঁর বদলে কেন বিধায়ক অগ্নিমিত্রাকে ভাষণ দিতে বলা হল, সেই প্রশ্নও উঠছিল। আবার শুভেন্দুকে কেন কেউ অধিবেশনে দেখতে পেলেন না, সেই আলোচনাও চলছিল। তবে সুকান্ত সব জল্পনা এবং কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ওই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বলে দিয়েছেন, শুভেন্দু দিল্লি যেতে পারেননি। কেন যেতে পারেননি, তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন সুকান্ত। সোমবার দিল্লিতে সুকান্ত একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেই তাঁকে শুভেন্দুর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তার জবাবেই সুকান্ত ওই কথা জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বিজেপির রীতি অনুযায়ী পাঁচ বছর অন্তর তাদের ‘রাষ্ট্রীয় অধিবেশন’ বসে। এর আগে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে, গত লোকসভা নির্বাচনের আগে দিল্লিতেই হয়েছিল সম্মেলন। তখন শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেননি। তিনি বিজেপিতে আসার পরে এটাই ছিল দলের সবচেয়ে বড় অধিবেশন। দলের সভাপতি জেপি নড্ডার বক্তৃতা দিয়ে শনিবার শুরু হয় অধিবেশন। রবিবার শেষ হয় প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্যের পরে। রবিবার বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। শনিবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সন্দেশখালির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। শাহের বক্তৃতাতেও বাংলা ‘সন্ত্রাস ও দুর্নীতির কেন্দ্র’ বলে অভিযোগ করা হয়। দেশের আট হাজারের বেশি প্রতিনিধির সামনে একই বিষয়ে বলেন বাংলার বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। বিজেপি সূত্রে জানা যায়, শুভেন্দুর অনুপস্থিতির কারণেই অগ্নিমিত্রাকে বক্তৃতা করতে বলা হয়েছিল।
ওই অধিবেশনে জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য হিসাবে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পান বাংলার সাত জন। এ ছাড়াও জাতীয় পরিষদের সদস্যেরাও থাকেন। তাঁদের মধ্যে বাংলার ৪২ জন। ডাক পান রাজ্যের ১৬ লোকসভা সাংসদ ও একমাত্র রাজ্যসভা সাংসদ অনন্ত রায়। অনেকগুলি পদে থাকার দৌলতেই ডাক পান সুকান্ত, শুভেন্দু। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি হিসাবে অধিবেশনে দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহ যোগ দিলেও যাননি তথাগত রায়। বিরোধী দলনেতা হিসাবে শুভেন্দু জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য। সামনে লোকসভা নির্বাচন থাকায় জেলা সভাপতিরাও ডাক পেয়েছিলেন। মোর্চা এবং শাখা সংগঠন ছাড়াও রাজ্যের ৪২ লোকসভা আসনের দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন তাঁদেরও ডাকা হয়েছিল।