অভিষেকের বাড়ি ঘেরাও, ডাক সুকান্তের। — ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের ডাকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে পাল্টা কর্মসূচির কথা শোনালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রবিবার বালুরঘাটে দলীয় কর্মসূচির ফাঁকে নিশীথের বাড়ি ঘেরাও প্রসঙ্গে সাংসদ সুকান্ত বলেন, ‘‘এ বার আমরাও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ঘেরাও করব!’’
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেকের দু’টি বাড়ি রয়েছে কলকাতায়। একটি কালীঘাটের পটুয়াপাড়ার মোড়ে ‘মোক্ষ ল্যান্ডমার্ক’। অপরটি হরিশ মুখার্জি রোডে ‘শান্তিনিকেতন’। এর মধ্যে কোন বাড়িটি ঘেরাও হবে, তা অবশ্য জানাননি সুকান্ত। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রাথমিক ভাবে ঠিক করেছি আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবারই ঘেরাও হবে। দক্ষিণ কলকাতা জেলার তরফে এই কর্মসূচি হবে। দিনক্ষণ আমরা বিস্তারিত পরিকল্পনার পরে ঘোষণা করব।’’ যার পাল্টা তৃণমূল সাংসদ তথা দলের মুখপাত্র শান্তনু সেন বলেছেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখন রাজনীতির মধ্যগগনে। তাঁর ভূমিকা অনেকটা সূর্যের মতো। সূর্যের দিকে যদি কেউ তাকিয়ে থাকে, তা হলে সূর্যের ক্ষতি হয় না। যে তাকায়, তার চোখই ঝলসে যায়। বিজেপি যদি আইন নিজেদের হাতে নিয়ে এই কর্মসূচি নেয় তবে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’’
গত ১১ ফেব্রুয়ারি কোচবিহার জেলার মাথাভাঙায় সভা ছিল অভিষেকের। সেখানেই রাজবংশী যুবক প্রেমকুমার বর্মনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সরব হন অভিষেক। প্রসঙ্গত, গত ২৪ ডিসেম্বর সীমান্তরক্ষা বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় দিনহাটার বাসিন্দা প্রেমকুমারের। মাথাভাঙায় মৃতের বাবা এবং মা’কে মঞ্চে এনে সান্ত্বনা দেন অভিষেক। তার তিন দিন পরে ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনহাটার সভা থেকে নিশীথের বাড়ি ঘেরাওয়ের ডাক দেন তিনি।
অভিষেকের নির্দেশ পাওয়ার পরে রবিবার সকাল থেকেই উত্তেজনা দিনহাটায়। নিশীথের বাড়ির রাস্তা আটকানো হয়েছে বাঁশের ব্যারিকেড করে। সেই গলিতে জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। ভেটাগুড়ির বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোতায়েন পুলিশ। এলাকায় ড্রোনে নজরদারি চালানো হচ্ছে। মোতায়েন র্যাফও।
তৃণমূলের এই কর্মসূচি ঘিরে বড় গোলমাল হতে পারে বলে পুলিশের আশঙ্কা থাকলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তেমন কিছুই ঘটেনি। অভিষেকে ‘বাড়ি ঘেরাও’ কর্মসূচির ডাক দিলেও কোচবিহার জেলা তৃণমূলের ব্যানার ছিল ‘বিক্ষোভ সমাবেশ’ নামে। ২৫ হাজার কর্মীর যোগদান করবে বলে তৃণমূল আগাম জানালেও অমিত শাহের ডেপুটির বাড়ির সামনে বড় জমায়েত করতে দেয়নি পুলিশ-প্রশাসন।
সুকান্ত সেই কর্মসূচির পাল্টা অভিষেকের বাড়ি ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিলেও তা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে অবশ্য বিজেপির মধ্যেও মতপার্থক্য রয়েছে। কারণ, বিজেপির সাংগঠনিক জেলা দক্ষিণ কলকাতায় তেমন শক্তি নেই দলের। সুকান্তের ঘোষণাকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না তৃণমূলও। দক্ষিণ কলকাতার এক তৃণমূল নেতা রবিবার বলেন, ‘‘হাস্যকর ঘোষণা। গোটা বাংলা থেকে লোক আনলেও বিজেপি আমাদের দুর্গে ঢুকতে পারবে না।’’