Classical Language

রাজ্যের দুই ছাত্রকে ‘ভাষা শহিদ’ ঘোষণার দাবি, ‘ধ্রুপদী’ কৃতিত্ব দিতে নারাজ সুকান্তের চিঠি মমতাকে

ছ’বছর আগে পুলিশের গুলিতে দুই ছাত্রের মৃত্যু অভিযোগ ওঠে। এখন বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র ধ্রুপদী মর্যাদা দেওয়ার পরে সেই ঘটনাকে আবার রাজনৈতিক আলোচনায় নিয়ে আসতে মরিয়া বিজেপি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:৫০
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

বাংলা ভাষাকে ‘ধ্রুপদী’ ঘোষণার কৃতিত্ব নিয়ে রাজনীতির মধ্যেই রাজ্যের কাছে নতুন দাবি জানালেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ‘ভাষা শহিদ’ হিসাবে দাড়িভিটে ২০১৮ সালে পুলিশের গুলিতে মৃত দুই ছাত্রের নাম ঘোষণার দাবি জানিয়ে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন সুকান্ত।

Advertisement

ছ’বছর আগে ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরের দাড়িভিট উচ্চ বিদ্যালয়ে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। দাড়িভিট উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষকের পদ শূন্য ছিল। ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকেরা দুই বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানাচ্ছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সালে ওই বিদ্যালয়ে উর্দু এবং সংস্কৃত শিক্ষক নিয়োগ হয়। ছাত্রছাত্রীরা এই নিয়োগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। দাবি করা হয়, উর্দু এবং সংস্কৃতের পরিবর্তে স্কুলে গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষক প্রয়োজন। বিক্ষোভ বাড়তে থাকলে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। দুই ছাত্র তাপস বর্মণ এবং রাজেশ সরকারের মৃত্যু হয়।

সেই ঘটনার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে সুকান্ত লিখেছেন, ‘‘উর্দু ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে গলা তুলে বাংলার যে দুই পড়ুয়া প্রাণ দিয়েছিলেন তাঁদের স্মরণে রাখাও আমাদের কর্তব্য। বাংলা ভাষার ‘ধ্রুপদী’ স্বীকৃতি মেলার পরে রাজ্য সরকার ওই দুই ছাত্রকে ‘ভাষা শহিদ’ হিসাবে ঘোষণা করুক। দাড়িভিটে তৈরি হোক দুই শহিদের স্মারক।’’ শুক্রবার বালুরঘাটে একটি সাংবাদিক বৈঠকও করেন সুকান্ত। সেখানে তিনি দাবি করেন, বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা ঘোষণার পিছনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোন ভূমিকা নেই।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর পরে সেই ঘোষণাকে তাঁদের জয় বলে দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গেই সুকান্ত বলেন, ‘‘২০০৫ সালে প্রথম সংস্কৃত ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেয় কেন্দ্র। ২০০৮ সালে তেলুগু এবং ২০১৩ সালে মালয়ালম এবং ওড়িয়া ভাষাকেও ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। কিন্তু তখন যা হয়নি সেটাই করেছে মোদী সরকার।’’ ওই সময়কালে বাংলা ভাষার ধ্রুপদী স্বীকৃতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কী কী আবেদন করেছে তৃণমূল তা দেখানো হোক বলেও দাবি তোলেন সুকান্ত।

দাড়িভিটের ঘটনার সময়েই তা নিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে নেমেছিল বিজেপি। সেই সময়ে তৃণমূল সরকারের মন্ত্রিসভাতেই ছিলেন এখন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে সম্প্রতি দাড়িভিটে নিহত ছাত্রের ভাইকে বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার কোটায় চাকরিও দিয়েছেন শুভেন্দু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement