বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ফাইল ছবি
‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পে ‘ভুয়ো নিয়োগপত্র’-এর অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা উচিত বলে মনে করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘ভুয়ো নিয়োগপত্র দিয়ে যদি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় গ্রেফতার হতে পারেন, তা হলে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী একই ভাবে প্রতারণা করলে তাঁকেও গ্রেফতার করা উচিত।’’
বিজেপির এই মন্তব্যকে অবশ্য ‘হাসির খোরাক’ বলে উল্লেখ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্য দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘বালখিল্যের কোনও উত্তর হয় না।’’ তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘নিয়োগপত্র সংক্রান্ত বিষয়ে কোথায়, কী হয়েছে তা সরকার দেখছে। ত্রুটি হলে সংশোধন হবে।’’
গত সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য সরকারের অনুষ্ঠানেই কারিগরি শিক্ষায় কৃতী ছাত্রছাত্রীদের হাতে বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ‘নিয়োগপত্র’ দেওয়া হয়। কিন্তু চাকরিপ্রার্থীরা অনেকেই দেখেন, নিয়োগপত্র নয়, তাঁদের যা দেওয়া হয়েছে তা প্রশিক্ষণের ‘অফার লেটার’। শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রার্থীরা দেখেন যে সেগুলিও ভুয়ো। বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে নবান্নেও।
শিক্ষা দফতরের নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে রাজ্য রাজনীতিও। তার সঙ্গে এ বার ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পের নিয়োগপত্র নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তাকেও জুড়ে দিল বিরোধীরা। সেই সঙ্গেই এ ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলের প্রশ্ন তুলে শনিবার বালুরঘাটে সুকান্ত বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্মসূচিকে উৎকর্ষ বাংলা বলে চালালে সেটারও টাকা বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশ কেন্দ্রের কাছে করব।’’
এ দিন খড়্গপুর শহরে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষও বলেন, “পুরো ব্যপারটা ভুয়ো। বিভিন্ন সংস্থার নাম করে একটা চিঠি তৈরি করেছেন। সেটা উৎকর্ষ বাংলার খামে দেওয়া হচ্ছে। সেই সংস্থার সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। মাঝখানে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা থাকছে।” আর হলদিয়ায় বিশ্বকর্মা পুজোর উদ্বোধনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য, ‘‘বিশ্বকর্মা বাবা আমাদের ছেড়ে পালাতে চাইছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, অনার্স, মাস্টার ডিগ্রিদের কী করতে হবে। বিশ্বকর্মা পুজো এখনও কাউকে দেখলাম না চা, ঘুগনি বিক্রি করতে।’’
এই সব মন্তব্যে বিজেপির ‘বাংলা-বিরোধী মনোভাব’ই দেখছে তৃণমূল। কুণালের অভিযোগ, ‘‘রাজ্যে কর্মসংস্থানের কাজ ব্যাহত করতেই এ সব অর্থহীন প্রচারে নেমেছেন বিজেপি নেতারা।’’ বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বছরে ২ কোটি চাকরির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজেপি এখন রাজনীতি করতে চাইছে।’’ কারিগরি শিক্ষায় কৃতীদের চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়ার নামে দু’বছরের প্রশিক্ষণের ভুয়ো অফার লেটারর দেওয়ার নিন্দা জানিয়েছে ডিএসও।