মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্বপন দাশগুপ্ত। ফাইল চিত্র।
মিল রয়েছে দিনে। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘খেলা হবে দিবস’ পালনের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ব্রিটিশ জমানায় কলকাতা দাঙ্গার স্মৃতি উস্কে দিতে সক্রিয় হল বিজেপি। ১৬ অগস্ট দিনটির তাৎপর্য রয়েছে ‘জাতীয় ফুটবলপ্রেমী দিবস’ হিসেবে। ১৯৮০ সালের এই দিনটিতেই ইডেনে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ডার্বি ঘিরে উত্তেজনার বলি হয়েছিলেন ১৬ জন ফুটবলপ্রেমী। তাই ‘খেলা হবে দিবস’ পালনের ক্ষেত্রে ১৬ অগস্টের বৃহত্তর তাৎপর্য রয়েছে বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের একাংশের। যদিও সে প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্ত ‘পাখির চোখ’ করেছেন ব্রিটিশ জমানায় কলকাতার হিংসা-পর্বকেই।
বুধবার ২১ জুলাইয়ের বক্তৃতায় মমতা ঘোষণা করেন, আগামী ২১ জুলাই ‘খেলা হবে দিবস’ পালিত হবে। এর পরেই বিজেপি নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন টুইটারে লেখেন, ‘আকর্ষণীয় বিষয়। ১৬ অগস্টকে খেলা হবে দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৪৬ সালে এই দিনটিতেই মুসলিম লিগ ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে’ এবং ‘গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস’ শুরু করেছিল। আজকের পশ্চিমবঙ্গে খেলা হবে ‘খেলা হবে’ স্লোগানটি প্রতিপক্ষের উপর হিংসার প্রতীকে পরিণত হয়েছে’।
ঘটনাচক্রে, ১৯৪৬ সালের ১৬ অগস্ট কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সূচনা হয়েছিল। যা ‘দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস’ নামে ইতিহাসে পরিচিত। ওই দিন পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্রের দাবিতে মুসলিম লিগের ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ (ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে) পালনের ডাক ঘিরেই হিংসার সূচনা হয়েছিল। হিংসায় উস্কানির অভিযোগ উঠেছিল মুসলিম লিগ নেতা তথা অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হুসেন সুরাওয়ার্দির দিকে।
মমতা বুধবার তাঁর বক্তৃতায় পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে ‘খেলা হবে’ স্লোগানের সাফল্যের কথা জানান। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘খেলা একটা হয়েছে। খেলা আবার হবে। যত দিন বিজেপি-কে বিদায় করতে না পারি রাজ্যে রাজ্যে খেলা হবে। সমস্ত জায়গায় খেলা হবে। আগামী ১৬ অগস্ট খেলা দিবস হিসেবে পালিত হবে।’’ তার পরেই সুকৌশলে বিজেপি নেতা স্বপন বিষয়টিকে প্রাক-স্বাধীনতা পর্বের কলকাতা হিংসার সঙ্গে ‘জুড়ে’ দেন।