রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।
বেজেছে কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের দামামা। সেই ভোটের রণকৌশল ঠিক করতে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ব্যস্ততা চরমে। বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের রেশ কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া বিজেপি-নেতৃত্ব মঙ্গলবার বসেছিলেন ভার্চুয়াল বৈঠকে। এটিই ছিল প্রার্থী ঘোষণার পর বিজেপি-র প্রথম সাংগঠনিক বৈঠক। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ রাজ্য বিজেপি-র নেতারা। ওই বৈঠক চলাকালীনই আচমকা ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিজেপি-র রাজ্যসভার সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তীর্যক মন্তব্য করে রূপা ভার্চুয়াল বৈঠক থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন বলে জানান ওই বৈঠকে উপস্থিত বিজেপি-র এক নেতা। এই ঘটনায় ফের সামনে এল রাজ্য বিজেপি-র অন্দরের ফাটল।
কলকাতার পুরভোটে ১৪৪ জন প্রার্থীর নাম সোমবার ঘোষণা করেছে বিজেপি। মঙ্গলবার রাতে পুরভোট সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। সুকান্তের পাশাপাশি বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ছাড়াও ওয়ার্ড স্তরের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
ওই বৈঠক চলার সময়ই চেঁচিয়ে ওঠেন রূপা। তিনি বলেন, ‘‘এ সব ভাটের বৈঠকে ডাকেন কেন?’’ তার পরই ভার্চুয়াল বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান তিনি। যার জেরে ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়েন বৈঠকে উপস্থিত প্রথম সারির নেতারা। বিষয়টি তাঁরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানাতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।
কেন বৈঠক চলাকালীন ক্ষোভ প্রকাশ করেন রূপা, তা স্পষ্ট নয়। ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগযোগ করাও সম্ভব হয়নি। কিন্তু কলকাতা পুরভোটের প্রার্থী নিয়ে তিনি যে রুষ্ট তার প্রমাণ মিলেছে মঙ্গলবার করা রূপার একটি ফেসবুক পোস্টে। সেই পোস্টে বিজেপি-র কাউন্সিলর তিস্তা দাস বিশ্বাসের মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁর স্বামী গৌরব বিশ্বাসের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বিজেপি-র ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তিস্তা কিছু দিন আগে পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন। সেই ওয়ার্ডে তিস্তার স্বামী গৌরবকে কেন প্রার্থী করা হয়নি, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই উঠেছে প্রশ্ন। ওই ওয়ার্ডে অন্য এক জনকে প্রার্থী করায় গৌরব নির্দল হিসেবে মনোনয়নও জমা দিয়েছেন। সেই গৌরবকে কেন বিজেপি-র প্রার্থী করা হল না, তা নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে রূপা ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবারের ফেসবুক পোস্টে নিজের ‘সীমিত সামর্থ’ দিয়ে গৌরবের ‘সঙ্গে থাকা’র কথা জানিয়েছেন বিজেপি-র রাজ্যসভার এই সাংসদ।