ছবি: সংগৃহীত।
রাজ্যের ২৯৪টি আসনে সংগঠনের হাল কেমন, তা পর্যালোচনা করতে কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে দু’দিনের বৈঠক করলেন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মঙ্গলবার জানান, ওই বৈঠকে ২৯৪টি বিধানসভা আসনের কোথায় দল কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভোটের কৌশল নিয়েও কথা হয়েছে। সোম এবং মঙ্গলবারের ওই বৈঠকে দিলীপবাবু ছাড়াও ছিলেন রাজ্য দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, সহ সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কিশোর বর্মন, দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়, সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ, রাজ্য দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং সহ পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন। তাৎপর্যপূর্ণ হল, যে হোটেলে সোম এবং মঙ্গলবার বিজেপির ওই বৈঠক হয়েছে, সোমবার রাতে সেখান থেকে একটি লাল রঙের গাড়িতে চড়ে বেরোতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। ফলে জিতেন্দ্র বিজেপিতে যাবেন কি না, তা নিয়ে ফের জল্পনা শুরু হয়েছে। তবে জিতেন্দ্রর দাবি, ‘‘ওখানে সপরিবার খেতে গিয়েছিলাম। আমি দিদির সঙ্গেই আছি।’’ তাঁর সঙ্গে বিজেপির যোগ নিয়ে ফের জল্পনা শুরু হওয়ার বিষয়টি ‘দুঃখজনক’ বলে টুইটারেও মন্তব্য করেছেন জিতেন্দ্র।
যদিও জিতেন্দ্রবাবুকে বিজেপিতে নিতে নিজেদের আপত্তির কথা প্রকাশ্যে জানানোয় অতি সম্প্রতি রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু এবং মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পালকে শো-কজ করেন দলীয় নেতৃত্ব। একই মত প্রকাশ্যে বলেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ও। বিজেপি সূত্রের খবর, তার পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাবুলকে ডেকে কথা বলেন। এ দিন সকালে কলকাতায় শিবপ্রকাশের বাড়িতে আর একটি বৈঠকেও বাবুলকে ডাকা হয়। সেখানে কৈলাস, মেনন এবং অমিতাভও ছিলেন বলে বিজেপি সূত্রের খবর। ওই বৈঠক থেকে বেরিয়ে জিতেন্দ্র-বিতর্ক নিয়ে বাবুল বলেন, ‘‘আমরা দলের একনিষ্ঠ সৈনিক। আমাদের দলে কোনও বিষয়ে বিতর্ক হলে আলোচনা হয়। সেই আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হলে তা জানানো হবে।’’
এ দিকে এ দিন সন্ধ্যায় বিজেপির হেস্টিংসের কার্যালয়ে যান শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে তিনি তাঁর নতুন ঘরে বসে দলের সহ সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনা করেন। দলীয় সূত্রের খবর, জিতেন্দ্রর কোন কোন এলাকায় প্রভাব আছে, তা সেখানে বিজেপি নেতাদের সামনে ব্যাখ্যা করেন শুভেন্দু। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে জিতেন্দ্রর বিজেপি-যোগের জল্পনার উপাদান থাকছেই।
তৃণমূলের জেলা কমিটির ডাকে দলের পশ্চিম বর্ধমান জেলার চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের নেতৃত্বে এ দিন আসানসোলে ‘বঙ্গধ্বনি অভিনন্দন পদযাত্রা’ ও সমাবেশ হয়। সেখানে জেলা তৃণমূলের প্রায় সব নেতাকে দেখা গেলেও জিতেন্দ্রকে দেখা যায়নি। এ প্রসঙ্গে জিতেন্দ্রর মন্তব্য, ‘‘আমি পরিবারের কাজে কলকাতায় আছি। তাই যোগ দিতে পারিনি। বুধবার জেলায় ফিরেই দলের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ব।’’