সুদীপকে সরিয়ে লকেটকে দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে বিতর্ক চলছেই। — নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবর্তে সংসদের খাদ্য এবং গণবণ্টন সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়। নবমীর রাতে নতুন ওই কমিটি ঘোষণা করা হয়। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় বিতর্ক। অনেক বলতে থাকেন, রাজ্য বিধানসভায় বিজেপিকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদ না দেওয়ার বদলা নিল দিল্লির শাসক দল। তবে সেই বিতর্ক চলার মধ্যেই একাদশীতে দিল্লি গিয়ে দ্বাদশীতে নতুন দায়িত্ব বুঝে নিলেন লকেট। শুক্রবার ওই কমিটির দায়িত্বে থাকা প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। তবে তাঁর দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কে যোগ দিতে নারাজ লকেট। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘বিতর্ক চলতেই থাকবে। তাতে কান না দিয়ে আমার কাজ যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা পালন করা। সময় নষ্ট না করে সেটাই আমি করছি এবং করব।’’
মঙ্গলবার সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলির চেয়ারম্যান পদ ঘোষণার পরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে যে, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বদলা কি সংসদে নিল বিজেপি? সাংসদ সংখ্যার নিরিখে সংসদে তৃতীয় বৃহত্তম দল হওয়া সত্ত্বেও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একটিও চেয়ারম্যান পদ পায়নি তৃণমূল। সেটা জানার পরেই নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে নিশানা করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। শুধু তৃণমূলই নয়, সংসদে বৃহত্তম বিরোধী দল হওয়া সত্ত্বেও দু’টি গুরুত্বপূর্ণ স্থায়ী কমিটি কংগ্রেসের হাতছাড়া হওয়ায় কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন তিনি।
একটা সময়ে রেল, অসামরিক বিমান পরিবহণ, সড়ক, জাহাজ ও সংস্কৃতি বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ ছিল সংসদে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল তৃণমূলের। এর পর একে একে সব ক’টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকেই অপসারিত হয়েছেন তৃণমূল সাংসদরা। একমাত্র টিকে ছিলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। খাদ্য এবং গণবণ্টন সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার রাতের রদবদলে সেটিও হাতছাড়া হল বাংলার শাসকদলের। নতুন কমিটিতে সুদীপ জায়গা পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত হয়েছেন বাংলা থেকেই নির্বাচিত হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। সেই রাতেই টুইটারে ডেরেক লেখেন, ‘নতুন স্থায়ী সংসদীয় কমিটি ঘোষিত হয়েছে। সংসদে তৃণমূল তৃতীয় বৃহত্তম দল এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল হওয়া সত্ত্বেও কোনও সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান পদ দেওয়া হল না। প্রধান বিরোধী দলও দু’টি গুরুত্বপূর্ণ কমিটির শীর্ষ পদ হারিয়েছে। এটাই নতুন ভারতের নির্মম বাস্তবতা।’
শুক্রবারই দায়িত্ব বুঝে নিলেন লকেট। — নিজস্ব চিত্র।
একটা সময়ে রেল, বিমান পরিবহণ, সড়ক, জাহাজ ও সংস্কৃতি বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ ছিল তৃণমূলের হাতে। একে একে সব ক’টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকেই অপসারিত হন তৃণমূল সাংসদেরা। টিকে ছিলেন শুধু সুদীপ। খাদ্য এবং গণবণ্টন সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান বদলে সেটিও হাতছাড়া হল তৃণমূলের। নতুন কমিটিতে সুদীপ জায়গা পেলেও কিন্তু চেয়ারম্যান হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট।
বাংলায় প্রথমে বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মুকুল রায়কে পিএসি চেয়ারম্যান করা হয়। এ নিয়ে অভিযোগ আদালতেও যায়। মুকুল সেই পদ ছেড়ে দিলে বসানো হয় কৃষ্ণ কল্যাণীকে। তিনিও খাতায়কলমে বিজেপি বিধায়ক হলেও তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এ সবের বদলা নিতেই কি তাঁকে নতুন দায়িত্বে বসানো হল? এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে লকেট বলেন, ‘‘এই কমিটির অনেক কাজ। নামে খাদ্য ও গণবণ্টন হলেও তার মধ্যে অনেক ভাগ রয়েছে। এমনকি, গয়নার হলমার্ক সংক্রান্ত বিষয়টিও এই কমিটির দায়িত্বে। আমি প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সব বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করলাম। এক দিনেই সবটা বোঝা সম্ভব নয়। আরও কথা বলতে হবে। তার পরে ঠিক করব কমিটির বৈঠক কবে ডাকা যায়।’’