(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো। —ফাইল ছবি।
সোমবার প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিরুদ্ধে দিল্লিতে দরবার করলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো। মঙ্গলবারই তিনি কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। জ্যোতির্ময়ের দাবি, তৃণমূলনেত্রী হিসাবে তিনি বিজেপির বা কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করতেই পারেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে রাজ্যের প্রধান সচিবালয়ে আইপিএস, আইএএসদের সামনে এমন কথা বলতে পারেন না।
প্রসঙ্গত, নবান্নে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক করেন। সেখানে আরজি কর-কাণ্ড এবং রাজ্যে চলতে থাকা লাগাতার আন্দোলন নিয়েও আলোচনা হয়। সেই বৈঠক থেকে আরজি কর-কাণ্ড থেকে শুরু করে দুর্গাপুজোর অনুদান, এমনকি জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি। ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচারিত বৈঠকে মমতা বলেন, ‘‘রাত দখলের নামে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে কেন্দ্রীয় সরকার এবং কিছু বাম দল। এরা ষড়যন্ত্র করে মানুষকে রাস্তায় নামাচ্ছে। বামেরা আমাকে আগে শারীরিক নির্যাতন করেছে আর বিজেপি এখন মানসিক নির্যাতন করছে।’’
এই বক্তব্য নিয়েই আপত্তি তুলেছেন জ্যোতির্ময়। ক্যাবিনেট সচিব টিভি সোমনাথনকে চিঠি লিখে এই কথা জানিয়ে দ্রুত পদক্ষেপের আর্জিও জানিয়েছেন তিনি। দাবি করেছেন, আমলাদের এবং রাজ্যের প্রশাসনিক ভবনকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। চিঠিতে জ্যোতির্ময় ১৯৬৮ সালের সিভিল সার্ভিস কনডাক্ট রুল মনে করিয়েছেন। যেখানে উল্লেখ রয়েছে, আমলারা কোনও রাজনৈতিক কাজে অংশ নিতে পারেন না। এটাও বলা রয়েছে যে, কোথাও সরকারের নিন্দা বা সমালোচনা হলে তাতে তাঁরা অংশগ্রহণ করতে পারেন না। এটা চললে তা কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্পর্কে আঘাত হানবে বলেও চিঠিতে মন্তব্য করেছেন জ্যোতির্ময়। স্মরণ করিয়েছেন দেশে জরুরি অবস্থার পরবর্তী সময়ে শাহ কমিশনের রিপোর্টের কথাও।
এই চিঠি প্রসঙ্গে জ্যোতির্ময় বলেন, ‘‘বাংলায় আমলাদের উপরে রাজনৈতিক চাপ নতুন কিছু নয়। অনেক নজির রয়েছে অতীতের এবং সাম্প্রতিক কালের। মুখ্যমন্ত্রী কোনও নিয়মই মানেন না, কাউকে মানতেও দেন না। এই অবস্থার প্রতিকার চাই।’’ দেশের তথা বাংলার গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক কাঠামোর গুরুত্ব রক্ষার জন্যই তাঁর এই চিঠি বলেও জানিয়েছেন জ্যোতির্ময়।