হাই কোর্টে এখন পুরোদস্তুর আইনজীবী জিতেন্দ্র তিওয়ারি। —নিজস্ব চিত্র।
পুনঃ আইনজীবী ভব! ভোটে হেরে ১২ বছর আগের পেশায় ফের যোগ দিলেন আসানসোলের বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। আসানসোলের এক সময়ের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা জিতেন্দ্র রাজনৈতিক মহলে পরিচিত জিতেন হিসাবে। সেই জিতেনই কালো কোট গায়ে এ বার হাই কোর্টে ফের ওকালতি শুরু করেছেন।
গত বিধানসভা ভোটে পাণ্ডবেশ্বর থেকে বিজেপি-র হয়ে লড়াই করেছিলেন জিতেন। তবে জিততে পারেননি। তার পরেও অবশ্য গেরুয়া শিবির থেকে রাজনৈতিক ল়ড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এ বার সেই ‘লড়াকু’ জিতেনই নেমে পড়লেন আদালতের সওয়াল-জবাবের লড়াইয়ে। প্র্যাকটিস করা শুরু করেছেন কলকাতা হাই কোর্টে।
গত বিধানসভা নির্বাচনে কমিশনের কাছে যে হলফনামা জিতেন জমা দিয়েছেন, সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি ১৯৯৯ সালে বিহারের বিআর আম্বেডকর বিশ্ববিদ্যালয়ের এসকেজে ল কলেজ থেকে আইনে স্নাতক হয়েছিলেন। রাজনীতিতে পুরোদমে আসার আগে আসানসোল আদালতে ২০০৯ সাল পর্যন্ত পেশাদার আইনজীবী হিসাবে কাজ করেছেন তিনি। তাঁর স্ত্রী চৈতালিও এক জন পেশাদার আইনজীবী ছিলেন। ২০০৯ সালে অবশ্য আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে অবশ্য আর কোর্টমুখো হননি তিনি। ২০১৫ সালে তিনি ওই পুরসভার মেয়র হন। সেই জিতেন ফের আইনজীবীর ভূমিকায়। এ বার কলকাতা হাই কোর্টে। উচ্চ আদালের বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যপদ গ্রহণ করেছেন তিনি। জিতেন বলছেন, ‘‘আমি আপাতত কলকাতাতেই থাকছি। তাই হাই কোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করলাম। আসানসোলে মাঝে মাঝে যাব।’’ জিতেন আরও বলছেন, ‘‘সাংসার চালাতে হবে তাই আইনজীবী হিসাবে কলকাতা হাই কোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করলাম।’’
রাজনীতিতে একটা বড় সময় কাটিয়ে জিতেনের পুরনো পেশায় ফেরা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তৈরি হয়েছে জল্পনাও। জিতেন যে এলাকার নেতা সেই আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় সম্প্রতি রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। সেই পথে কি জিতেনও এগোচ্ছেন? না কি তাঁর পেশাবদল ভিন্ন কোনও সমীকরণের ইঙ্গিত? এ নিয়ে রহস্য বজায় রেখেই জিতেন বলেন, ‘‘রাজনীতি নিয়ে আমি কিছু বলব না।’’
জিতেনের দ্বিতীয় ইনিংস নিয়ে আসানসোলের পুর প্রশাসক তথা তৃণমূল নেতা অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি বাস্তব কথা বলেছেন। কারণ উনি যখন মেয়র এবং পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক ছিল তখন ভাতা পেতেন। এখন সেটা নেই। তাই আইনজীবী হিসাবে কাজ করছেন।’’ আবার বিজেপি-র পশ্চিম বর্ধমান জেলার আহ্বায়ক শিবরাম বর্মণ বলছেন, ‘‘জিতেন্দ্র তিওয়ারি আসার পর আমাদের দল অনেক মজবুত হয়েছে। আমাদের দলে কোনও সর্বক্ষণের কর্মী বা বেতনভোগী কর্মী বলে কিছু নেই। উনি এক সময় আসানসোলের নামী উকিল ছিলেন। সেই কাজই উনি আসানসোল থেকে কলকাতা গিয়ে করছেন। এটা ভাল ব্যাপার। সামনেই পুরসভা ভোট। আবার আমরা একসঙ্গে কাজ করব।’’