হাজরার সভা তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণের লক্ষ্যে হলেও শুভেন্দুর মন্তব্যে বিজেপির দলীয় দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসে যায় বলে গেরুয়া শিবিরের অনেকেই মনে করছেন। ফাইল চিত্র।
প্রথমে দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন দিল্লিতে। সোমবার সকালে। তারিখ রাজনীতি নিয়ে একটু খোঁচাও ছিল। সন্ধ্যায় কলকাতায় হাজরার সভা থেকে জবাব দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার পাল্টা মন্তব্য দিলীপের। সব মিলিয়ে জমে উঠেছে বিজেপির অন্দরের লড়াই। শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘‘আমি মর্নিং ওয়াক করতে গিয়ে মিডিয়াকে বাইট দিয়ে বেড়াই না।’’ তার জবাবে দিলীপের মন্তব্য, ‘‘সকালে উঠতে একটু দম লাগে।’’
শুভেন্দু অনেক দিন থেকেই ডিসেম্বর তত্ত্ব নিয়ে সরব। প্রথমে রাজ্য সরকার পড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেন। পরে মন্তব্য করেন, সরকার থাকলেও ক্ষমতা থাকবে না। নবান্ন পঙ্গু হয়ে যাবে। সম্প্রতি তিনটি তারিখও জানান তিনি। ১২, ১৪, ২১ ডিসেম্বর বড় কিছু ঘটবে বলে দাবি করেছিলেন। তারই প্রেক্ষিতে সোমবার, ১২ ডিসেম্বর সকালে দিলীপ বলেন, ‘‘আদালতে কী ফয়সালা হবে জানি না। তাই আদালতের উপরে ভিত্তি করে কিছু বলা যায় না। রাজনীতিতে এই তারিখের কোনও গুরুত্ব নেই।’’
এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হাজরার সভা থেকে শুভেন্দুর কটাক্ষ ছিল দিলীপের উদ্দেশে। তিনি বলেন, ‘‘আমি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, গিমিকে বিশ্বাস করি না। আমি মর্নিং ওয়াক করতে গিয়ে মিডিয়াকে বাইট দিয়ে বেড়াই না। আমি দায়িত্ব নিয়ে কথা বলি।’’ মঙ্গলবার তারই জবাবে সংবাদমাধ্যমকে দিলীপ বলেন, ‘‘আমাকে দেখে প্রেরণা পেয়ে অনেকে এখন মর্নিং ওয়াক করছেন। ভাল কথা, শরীর ভাল থাকে। আর সকালে ওঠার জন্য দম চাই একটু। কে কার সম্বন্ধে কেন বলেছেন আমার জানা নেই, আমার কিছু বলারও নেই।’’ শুভেন্দুর ‘দায়িত্ব নিয়ে কথা বলা’ প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘কে ব্যক্তিগত ভাবে কী বলছেন, কী করছেন তাতে কিছু যায় আসে না। দেশের রাজনীতি, পশ্চিমবঙ্গের ভবিষ্যৎ আর রাজ্যের রাজনীতি নিয়ে আমাদের চিন্তা। নানা রকম মত থাকতে পারে। কারও মত নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’’
হাজরার সভা তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণের লক্ষ্যে হলেও শুভেন্দুর মন্তব্যে বিজেপির দলীয় দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসে যায় বলে গেরুয়া শিবিরের অনেকেই মনে করছেন। সেই পরিস্থিতিতে ‘দম লাগা’র কথা বলে দলীয় লড়াই জিইয়েই রাখলেন দিলীপ। শুভেন্দু এর জবাব দেন কি না, সে দিকে তাকিয়ে রাজ্য রাজনীতি।