অর্জুন সিংহ এবং দিলীপ ঘোষ।
সাংসদ-সংখ্যা ১৮ থেকে কমে এখন ১৬। বিধানসভা নির্বাচনে ৭৭ আসন জিতলেও উপনির্বাচনে কমে ৭৫ হয়ে যায় বিধায়ক সংখ্যা। এখন মুকুল রায়-সহ পাঁচ বিধায়কের দলবদলে সেটাও কমে ৭০। বিধানসভা নির্বাচনের কিছু আগে বিজেপিতে আসা অনেকেই এখন তৃণমূলে ফিরেছেন। এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য নেতৃত্বের বদলে দিল্লির দিকেই আঙুল তুললেন দিলীপ ঘোষ। এখন যাঁরা তৃণমূলে ফিরছেন তাঁরা তাঁর আমলেই বিজেপিতে এলেও সেই দায় নিতে নারাজ দিলীপের দাবি, যাঁরা দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁরাই ফিরছেন। প্রায় সকলেই চলে গিয়েছেন।
শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনের ইউটিউব ও ফেসবুক লাইভ ‘অ-জানাকথা’ অনুষ্ঠানে এক দর্শকের প্রশ্ন ছিল, দলে কর্মী ধরে রাখতে কি কোনও রাজনৈতিক পরামর্শদাতা নিয়োগ করবে বিজেপি? এর জবাবে দিলীপ বলেন, ‘‘প্রশ্নটা ভুল করেছেন। কর্মীরা চলে যাচ্ছেন না, নেতারা চলে যাচ্ছেন।’’ এর পরেই প্রশ্ন ওঠে কেন চলে যাচ্ছেন একের পর এক নেতা? কেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ চলে গেলেন? দিলীপ বলেন, ‘‘অর্জুন সিংহ কর্মী নন, নেতা। নেতাদের কোনও দিন কেউ ধরে রাখতে পারে না। ওঁরা কেন এসেছিলেন সেটা তো আগে ঠিক হোক। তার পরে কেন গেলেন সেটা ভাবা যাবে।’’ এঁরা সকলেই তো যখন বিজেপিতে এসেছিলেন তখন দলের রাজ্য সভাপতি ছিলেন দিলীপ? জবাবে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘অর্জুন সিংহ কিন্তু আমার হাত ধরে দলে আসেননি। দিল্লিতে যোগ দিয়েছিলেন। যাঁরা যাঁরা দিল্লিতে গিয়ে যোগ দিয়েছেন তাঁরা প্রায় সকলেই চলে গিয়েছেন। দিল্লির যে হাওয়া, জল সেটা সবার হজম হয় না। আমি সে জন্য দিল্লি কম যেতাম। এখন সাংসদ হওয়ায় যেতে হয়। তাও ডাকলে তবে যাই। না হলে, এখানে লড়াই করি।’’
বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল নেতাদের দলে নিতে দরজা হাট করে খুলে রেখেছিল বিজেপি। আলাদা করে যোগদান মেলা কর্মসূচি নেওয়া হয়। সেই প্রসঙ্গে দিলীপের দাবি, অন্য দলের কর্মী, সমর্থক নেওয়ার জন্যই যোগদান মেলা ছিল। নেতা নেওয়ার জন্য নয়। অন্য দলের নেতা নেওয়া নিয়ে সেই সময়ে দলের অন্দরে দিলীপ বিরোধিতা করেছিলেন বলেও শোনা যায়। পরে ‘আদি’ বনাম ‘নব্য’ লড়াইতেও অংশ নেন তিনি। সেই সময়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উদ্যোগে সব্যসাচী দত্ত, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের দলে নেওয়ায় যে তাঁর সায় ছিল না সেটাও স্পষ্ট করে দিলেন দিলীপ। দিল্লির নেতাদের দিকে আঙুল তুললেও দিলীপ অবশ্য কারও নাম করেননি। তবে বলেন, ‘‘তৃণমূল থেকে আসা অনেক নেতারই নেগটিভ ইমেজ ছিল। সেটা বিজেপির সঙ্গে লেপ্টে যায়। যেটা মানুষ ভাল ভাবে নেয়নি।’’ শনিবার দিলীপ এমন মন্তব্যও করেন যে, ‘‘এক সময়ে যাঁদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই ছিল তাঁদের অনেকেই ভোটের সময়ে সামনের সারিতে এসে যান।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।