বাইরনের সঙ্গে কথা হয়েছিল দিলীপ ঘোষেরও। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসা বাইরন বিশ্বাস যোগ দিতে চেয়েছিলেন বিজেপিতেও! কিন্তু বাংলার বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষই তাঁকে ফিরিয়ে দেন। বাইরনের তৃণমূলে যোগদান নিয়ে যখন রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়, তখন এমনই দাবি করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ওকে চিনি। ও একসময় বিজেপি করতে চেয়েছিল। আমি বারণ করেছিলাম। বলেছিলাম, তুমি ব্যবসায়ী বাড়ির ছেলে। বিজেপি করলে তোমার ব্যবসা করতে অসুবিধা হবে। তুমি যে হেতু সংখ্যালঘু, তোমাকে স্বীকৃতি দেবে না।’’
মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি বিধানসভা উপনির্বাচনে কংগ্রেস বাইরনকে প্রার্থী করার পরই বিজেপি দাবি করেছিল, জিতেই তৃণমূলে যোগ দেবেন বাইরন। আবার বাইরন নিজে তৃণমূলে যোগদানের পর বলেছেন, তিনি বরাবরই তৃণমূলে ছিলেন। কিন্তু দিলীপ বলেছেন, বাইরন তাঁর কাছে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন বছর কয়েক আগেই। যদিও সেটি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কি না তা স্পষ্ট করেননি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিপুল জয়ের গরিমা হঠাৎই থমকে গিয়েছিল ২০২৩ সালের সাগরদিঘি উপনির্বাচনে। কারণ ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে যে সাগরদিঘি জিতেছিল তৃণমূল, উপনির্বাচনে সেই আসনেই তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন সিপিএম সমর্থিত কংগ্রেসের প্রার্থী বাইরন। ফলে প্রশ্ন উঠেছিল, তবে কি তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক সংখ্যালঘু ভোট থেকে বঞ্চিত হল। বিরোধীরা এই দাবি তুললেও তৃণমূল তা মেনে নেয়নি। বুধবার বাইরন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে দিলীপ আবার টেনে এনেছেন সেই সংখ্যালঘু প্রসঙ্গই। দিলীপ বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস ওকে পেতে প্রচুর টাকা খরচ করেছে। কিন্তু বাইরন রাজনীতির লোক নন। ওঁকে সামনে রেখে সংখ্যালঘু সমাজ তৃণমূলকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এখন তাঁরাও ধোকা খেয়ে গেলেন।’’ এ ব্যাপারে সিপিএম এবং কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে দিলীপ বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস সিপিএমের কিছুই ছিল না। এখনও নেই। ল্যাংটার নেই বাটপারের ভয়।’’
সোমবার মেদিনীপুরের ঘাটালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার যাত্রার মঞ্চে অভিষেকের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা তুলে নেন বাইরন। তার পর থেকেই তাঁর দলবদল নিয়ে বাংলার রাজনীতির অলিন্দে তোলপাড় চলছে। অনেকেই এখন বাইরনের ভোটে জেতার আগে তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল যে সব অভিযোগ করেছিল, তার প্রসঙ্গ টেনে আনছেন। দিলীপও সেই প্রসঙ্গে বলেছেন। তবে তাঁর ব্যাখ্যা কিছুটা অন্য। দিলীপ বলেছেন, ‘‘তৃণমূল ২ থেকে ৩ টে গোল খেয়েছে। বাইরন ভোটে দাঁড়ানোর আগেই তাঁর নামে একের পর এক কেস দিয়েছিল। তাঁকে কিছুটা বাধ্য করা হয়েছিল।’’
তবে কি তৃণমূল বাধ্য করেছে বলেই বাইরন তৃণমূলে যোগ দিলেন? দিলীপ অবশ্য তার জবাব দেননি। তবে গেরুয়া শিবিরের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসকে চটিয়ে কেউ ব্যবসা করে খেতে পারবে না। বাইরন ব্যবসায়ী। কৃষ্ণ কল্যাণী, অর্জুন সিং, সবাইকেই তাই আমরা এ ভাবে সারেন্ডার করতে দেখেছি।’’