Dilip Ghosh

BJP: ‘ভাই’ সুকান্তর হাত ধরে বাংলা ঘোরাবেন ‘দাদা’ দিলীপ, ব্যাটন বদল শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিতে

গত ২০ সেপ্টেম্বর দিলীপকে সরিয়ে সুকান্তকে রাজ্য সভাপতি করে। আচমকা না হলেও বিষয়টি এত দ্রুত হবে বলে আঁচ করতে পারেননি অনেকেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২১ ১৪:০৫
Share:

প্রথম দফায় তিন জেলা সফর। ফাইল চিত্র

আচমকা রাজ্য সভাপতি পদ থেকে সরে যাওয়ার ধাক্কা সামলে এ বার উত্তরসূরির হাতে সংগঠনের ব্যাটন তুলে দিতে উদ্যোগী হয়েছেন দিলীপ ঘোষ। বিজেপি-র নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে তাঁর জেলা সফর।

Advertisement

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দফায় দফায় সব জেলায় ঘুরবেন দিলীপ-সুকান্ত জুটি। এই কর্মসূচির পোশাকি নাম ‘সংবর্ধনা সফর’। তবে মূলত জেলায় জেলায় ঘুরিয়ে দলের খুঁটিনাটি বিষয় সুকান্তকে জানাতেই দিলীপ প্রথমে এই কর্মসূচির পরিকল্পনা করেন। পরে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা তাতে সায় দেন। সেই মতো শুক্রবার বীরভূম জেলা দিয়ে শুরু হচ্ছে সেই কর্মসূচি। প্রথম দফায় বীরভূম ছাড়াও পূর্ব বর্ধমান এবং নদিয়ায় যাবেন দিলীপ-সুকান্ত। এর পরে দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলা এবং জাঁকিয়ে শীত পড়ার আগে উত্তরবঙ্গ সফরও হবে।

প্রসঙ্গত, গত ২০ সেপ্টম্বর দিলীপকে সরিয়ে সুকান্তকে রাজ্য সভাপতি করেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এটি আচমকা না হলেও এত দ্রুত যে হবে, তা বিজেপি নেতাদেরও অনেকে আঁচ করতে পারেননি। দলের অন্দরে একাংশের দাবি, বাবুল সুপ্রিয়ের দলবদল ও তার পরে তৈরি হওয়া বিতর্কের জন্যই তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত নেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে এর কোনও সমর্থন মেলেনি।

Advertisement

২০১৯ সালে রাজনীতিতে যোগ দিয়েই বালুরঘাটে আসনে লোকসভার প্রার্থী ও সাংসদ হন সুকান্ত। দু’বছর কাটতে না কাটতেই বড় দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। এর আগে সে ভাবে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেননি সুকান্ত। সেই কারণেই ‘নভিস’ সুকান্তের প্রথম জেলা সফরে ‘অভিজ্ঞ’ দিলীপকে সঙ্গে দিচ্ছে বিজেপি।

ওই সফর নিয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘এটা আমাদের দলের পরম্পরা। দায়িত্ব পরিবর্তন নতুন কিছু নয়। সব সময় নতুনদের এগিয়ে দিতে হয়। আর সেই দায়িত্বটা নিতে হয় প্রবীণদেরই। আমিই তাই ঠিক করেছি, সব জেলায় গিয়ে সুকান্তর সঙ্গে স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মুখোমুখি পরিচয় করে দেব। একই সঙ্গে নতুন রাজ্য সভাপতিকে বরণ করার জন্য সব জেলাকে সংবর্ধনার আয়োজন করতে বলা হয়েছে।’’

দিলীপ এখন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। সেই দায়িত্ব পাওয়ার পর সোমবার প্রথম কোনও কেন্দ্রীয় বৈঠকে যোগ দেন দিল্লিতে। বুধবার সকালে ফিরেছেন কলকাতায়। আর বৃহস্পতিবার শুরু তাঁদের সফর। দিলীপ দায়িত্ব নেওয়ার সময় কিন্তু এই ভাবে নবীনের হাতে ব্যাটন তুলে দেওয়ার নজির দেখা যায়নি। যা নিয়ে দিলীপ বলছেন, ‘‘আগে কী হয়েছে সেটা মনে রাখতে নেই। কী হচ্ছে আর কী হবে, সেটাই দেখার। তখন বিজেপি-র সেই শক্তিও ছিল না। এখন রাজ্যের ১৮টা লোকসভা এবং ৭৭টা বিধানসভা এলাকায় দল নির্বাচিত। শক্তিও বেড়েছে। তাই এমন কর্মসূচি সঠিক ভাবে সফল করাও সম্ভব হবে।’’ একই সঙ্গে দিলীপ জানান, বিধানসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হওয়ার জন্য অনেক জায়গাতেই কর্মীরা এখনও মুষড়ে রয়েছেন। তাঁদের চাঙ্গা করতে এই সফর কাজে লাগবে।

দিলীপের সঙ্গে রাজ্য সফর শুরু করার আগে বুধবারই কলকাতায় এসেছেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত। তিনি বলেন, ‘‘এটাকে এত বড় করে দেখার কিছু নেই। পরিবর্তনটাই স্বাভাবিক। প্রকৃতির মতো সংগঠনেও। আমিও চিরকাল থাকব না। আমার পরে কেউ আসবে। এই পরিবর্তনকে উদ্‌যাপন করতে হয়। দিলীপ’দার সঙ্গে আমার এই সফর তেমনই এক উদ্‌যাপন।’’ সুকান্ত জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সব জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর ভার্চুয়াল মাধ্যমে কথা হয়েছে। অনেক সঙ্গে সামনাসামনিও আলোচনা হয়েছে। এ বার এই সফরে আরও ঘনিষ্ঠতা বাড়বে। এর পরেই কোনও কর্মসূচি নেওয়ার কথা ভাববে রাজ্য বিজেপি।

প্রসঙ্গত নতুন রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে প্রথমেই ইটাহারে দলীয় নেতার মৃত্যুর প্রতিবাদে মঙ্গলবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বন্‌ধ ডেকেছিলেন সুকান্ত। সেটিই তাঁর ঘোষণায় প্রথম কোনও আন্দোলন। বিজেপি সূত্রে খবর, এই পর্বের জেলা সফর শেষ হয়ে গেলে চার আসনে উপনির্বাচনের আগেই ইটাহারে বড় আকারে জমায়েতের পরিকল্পনাও রয়েছে দলের। তবে সে ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত পরিকল্পনা হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement