হাসপাতালে শুভেন্দু অধিকারী, শঙ্কুদেব পণ্ডা। নিজস্ব চিত্র
মিনাখাঁয় বিজেপি নেতা বাবু মাস্টারের গাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠল। তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি, বোমা ছোড়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। এই মুহূর্তে তিনি কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর শরীরের একাধিক জায়গায় বোমার স্প্লিন্টার বিঁধে ছিল বলে জানা গিয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরেই তাঁকে দেখতে গিয়েছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী, শঙ্কুদেব পণ্ডা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বসিরহাটের সভা সেরে কলকাতার দিকে ফিরছিলেন সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া বাবু মাস্টার। সেই সময় বাসন্তী হাইওয়ের উপর লাউহাটি পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে তাঁর উপর হামলা চলে বলে অভিযোগ। বিজেপি-র দাবি, অন্তত ১০-১২ জন বাবু মাস্টারের কালো রঙের গাড়ি গাড়ি ঘিরে ধরে। লাউহাটি পুলিশ ফাঁড়ির কাছে একটি স্পিড ব্রেকারের আগে গাড়ি আস্তে হয়ে গেলে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। প্রথমে বোমা ছোড়া হয়, তার পরে বাবুকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা।
বিজেপি-র দাবি, বোমার আঘাতে আহত হয়েছেন বাবু মাস্টার ও তাঁর গাড়ির চালক। ঘটনার পর দু’জনকেই কলকাতায় বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর বাবু মাস্টারের গাড়ির চালক কোনও মতে গাড়িটি লাউহাটি পুলিশ ফাঁড়ির কাছে নিয়ে যান। তার পর সেখান থেকে অন্য গাড়ি করে আহত অবস্থায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রাত হলে হাসপাতাল সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, জরুরি বিভাগে বাবু মাস্টারের শরীর থেকে বোমার স্প্লিন্টার বের করে ফেলা সম্ভব হয়েছে।
এই গাড়িতেই ছিলেন বাবু মাস্টার। ছবি সৌজন্যে টুইটার।
১৮ ডিসেম্বর তৃণমূল ছাড়েন বাবু মাস্টার। বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, অনেক দিন থেকেই ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টার হামলার আশঙ্কা করেছিলেন। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। হাসপাতালের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বাবু মাস্টারের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, বোমার আঘাতে এই ক্ষত তৈরি হয়েছে।
রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের যোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘হতে পারে এ নব্য বিজেপির সঙ্গে, পুরনো বিজেপির লড়াই। কিন্তু এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল যুক্ত নয়। দীর্ঘদিন ধরেই বাবু মাস্টারের অনেক শত্রু আছে। উনি দলে ছিলেন যখন, আমি উচ্চ নেতৃত্বকে বলেছি, ওঁকে দলে রাখা ঠিক হচ্ছে না। তারপরেও জেলা পরিষদের পদ দেওয়া হয়েছিল ওঁকে। এখন বিজেপিতে গিয়েছে। যাই হোক, তৃণমূল হিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তাই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনওরকম যোগ নেই।’’
বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের তরফে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, ‘‘ঘটনায় প্রমাণ করে রাজ্যে আইনের শাসন নেই। এ ভাবে হিংসার ঘটনা ঘটিয়ে কী প্রমাণ করতে চাইছে তৃণমূল? এর আগেও মণীশ শুক্লকে রাস্তায় মেরে ফেলা হয়েছিল। আজ বাবু মাস্টারকে একই কায়দায় হত্যার চেষ্টা করা হল।’’