কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ও তৃণমূলনেত্রী মহুয়া মৈত্র। — ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালির ঘটনাক্রম নিয়ে রাজ্য রাজনীতির উত্তাপ জাতীয় স্তরে পৌঁছে দিতে চায় বিজেপি। সোমবার সেই লক্ষ্যেই বিজেপির কেন্দ্রীয় দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। গত কয়েক দিনে সংবাদমাধ্যমের সামনে সন্দেশখালির বিক্ষোভকারী মহিলারা বাংলায় যা যা বলেছেন তারই হিন্দি ও ইংরেজি তর্জমা করেন স্মৃতি। স্পষ্ট করে দেন তাঁর লক্ষ্যও। জাতীয় সংবাদমাধ্যমে তাঁর বক্তব্য সম্প্রচারের মাধ্যমে বাংলার ঘটনা গোটা দেশকে জানানোই স্মৃতির লক্ষ্য। সেই সূত্রে, তৃণমূলের পাশাপাশি রাজ্য সরকারকেও আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী। এর পরেই সমাজমাধ্যমে স্মৃতিকে আক্রমণ করেন বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
সন্দেশখালিতে টানা বিক্ষোভ চললেও রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়ে যায় শুক্রবার রাত থেকে ১৪৪ ধারা জারি করার পরে। সন্দেশখালিকাণ্ডে নাম জড়ানোর পরেই উত্তমকে সাসপেন্ড করে শাসকদল। শনিবারই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়াও গ্রেফতার করা হয়েছে বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহ ও সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে। রবিবার মিছিল নিয়ে যান সিপিএমের যুবনেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। সোমবার সকালে যায় রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দল। সন্দেশখালিতে গিয়েছেন রাজ্যপাল আনন্দ বোসও। অন্য দিকে, বিধানসভায় সন্দেশখালি নিয়ে বিক্ষোভের জেরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ ছয় বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করেছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরে শুভেন্দু-সহ দলের সব বিধায়ক সন্দেশখালি যেতে চান। যদিও রাস্তাতেই আটকে দেয় পুলিশ।
এ সবের মধ্যেই দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন স্মৃতি। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘বাংলায় তৃণমূলের লোকেরা যে ভাবে মহিলাদের উপরে অত্যাচার করছে তা জানার পরেও রাজ্য সরকার চুপ। ১৪৪ ধারা জারি হওয়ায় এলাকার বাসিন্দারা নিজেদের কথা সংবাদমাধ্যমের সামনে বলতে পারছেন না।’’ এমন আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে তিনি সন্দেশখালির বিক্ষোভকারী মহিলাদের অভিযোগ অনুবাদ করে শোনান। সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘শাহজাহান আলিকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ। উল্টে বিরোধীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।’’ জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিকরা এ নিয়ে চুপ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। প্রশ্ন ওঠে, কেন্দ্রীয় সরকার কি কোনও পদক্ষেপ করবে? জবাবে স্মৃতি বলেন, ‘‘সাংবিধানিক মর্যাদা রক্ষা করেই যাবতীয় পদক্ষেপ হবে। তবে গোটা দেশের জানা দরকার ঠিক কী ঘটেছে সন্দেশখালির মহিলাদের উপরে।’’ যা ঘটছে তাতে দর্শকের মতো বসে থাকা যায় না বলেও মন্তব্য করেন।
এর জবাব দিতেই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে স্মৃতিকে আক্রমণ করেছেন মহুয়া। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, মণিপুরের সন্ত্রাস, বিলকিস বানো, মহিলা কুস্তিগির এবং ব্রিজ ভূষণ নিয়ে স্মৃতিরা দর্শকের ভূমিকা ছিলেন কেন?