ফাইল চিত্র।
বিশ্বভারতী যে ভাবে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের নোটিস দিয়ে ‘হয়রান’ করছে, তা ‘ভারতের লজ্জা’ বলে দু’দিন আগে টুইট করেছিলেন দেশের প্রাক্তন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু। সোমবার টুইটেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে নিশানা বানালেন বিজেপি নেতা অমিত মালবীয়। তাঁর দাবি, ‘‘অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন অনিয়ম এবং জমি দখলে লিপ্ত হয়েছেন।” টুইটে তিনি আক্রমণ করেছেন বহু বিশিষ্টজনকে, যাঁরা জমি-বিতর্কে অমর্ত্যকে সমর্থন করেছেন।
ইতিমধ্যে, বিশ্বভারতীর ভূমিকাকে সমালোচনা করে জনমত গঠনে আগামী ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় কলকাতার নন্দন-৩ প্রেক্ষাগৃহে একটি সভারও আয়োজন করা হয়েছে। অনেকের তরফে অনিতা অগ্নিহোত্রী এবং অচিন চক্রবর্তী এই সভার ডাক দিয়েছেন। কয়েক দিন আগে অমর্ত্যকে হেনস্থা করার অভিযোগ তুলে খোলা চিঠি দেন পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘ ও ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘের শতাধিক বিশিষ্টজন। তাঁরা লিখেছিলেন, ‘উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত কিছু জমি অধ্যাপক সেন ভোগ করছেন, এটা সজ্ঞান অপরাধ ধরে নিয়ে বিশ্বভারতী তাঁকে অপরাধী সাব্যস্ত করেছে এবং অপমানজনক ব্যবহার করে চলেছে। বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু বিশ্বভারতী অধ্যাপক সেনকে পৈতৃক গৃহ থেকে উৎখাত করতে উদ্যত হয়েছে, এই ঘটনা আমাদের মাথা হেঁট করে দিয়েছে’।
বিশ্বভারতীর আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী কেন এ বিষয়ে ‘গভীর মৌন’, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে ওই বিবৃতিতে। এ দিন তাঁদেরই আক্রমণ করে বিজেপি নেতা অমিত মালবীয় টুইটে লিখেছেন, ‘১২০ জন, তথাকথিত বিখ্যাত ব্যক্তি, তাঁর (অমর্ত্য) সমর্থনে একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন। এই লোকেরা কার কথায় ওই বিবৃতিতে সই করেছেন, তা আমি প্রশ্ন করতে চাই। তাঁদের কলম কি পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদের কাছে বিক্রির জন্য?’
বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী, আশ্রমিক থেকে শুরু করে শিক্ষকদের বড় অংশ এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ। বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত নিন্দনীয়। অমর্ত্য সেনের হয়ে যাঁরা বলছেন, তাঁরাও নামকরা ব্যক্তিত্ব। তাঁদেরও দেখছি ছাড়া হচ্ছে না, ক্রমাগত আক্রমণ করা হচ্ছে।” বোলপুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “বিজেপি নেতারা শুধু মিথ্যাকে সত্য বলে প্রমাণ করতে চান। বিশ্ববরেণ্য মানুষকে অপমান করে এখানেও একই জিনিস করতে চাইছেন।’’