শনিবার জাতীয় গ্রন্থাগারের সভাকক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অমিত। সেখানে শুরুর বক্তব্যেই রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘দল কোনও ব্যক্তির নয়! এটা আসলে টিম ওয়ার্ক। সেই টিমের সিদ্ধান্ত কোনও সময়ে ভুল হয়, আবার কখনও ঠিক হয়। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সেটি দল নিয়েছে মনে করতে হবে।’’
অমিত মালবীয়াই এখন বঙ্গ বিজেপি-র দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা।
বিজেপি-র নতুন রাজ্য কমিটি তৈরি হয় গত ডিসেম্বরে। এর পর থেকেই দলের একাংশের মধ্যে শুরু হয় বিদ্রোহ। নতুন করে জেলা সভাপতিদের নাম ঘোষণার পরে সেই বিদ্রোহ আরও বাড়তে থাকে। ইতিমধ্যেই সেই বিদ্রোহের মুখ হওয়া প্রাক্তন রাজ্যে সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিজেপি। প্রাক্তন রাজ্য নেতা রীতেশ তিওয়ারিকেও দলবিরোধী আচরণের অভিযোগ তুলে প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিস এবং পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর মধ্য দিয়েই বিজেপি বুঝিয়ে দিয়েছিল কোনও রকম বিদ্রোহ মাথাচাড়া দিলেই কড়া হাতে মোকাবিলা করা হবে। শনিবার নতুন করে সেই বার্তাই দিয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতা অমিত মলবীয়। দলীয় বৈঠকে তিনি জানিয়ে দেন, মনে রাখতে হবে কোনও সিদ্ধান্তই কারও ব্যক্তিগত নয়, দলের সিদ্ধান্ত। বুঝিয়ে দেন, এ সব নিয়ে বিরোধিতা দল মেনে নেবে না।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মতুয়া সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বে কলকাতায় বিদ্রোহীদের নিয়ে গত ১৫ জানুয়ারি একটি বৈঠক হয়। সেখানে আরও অনেকের সঙ্গে হাজির ছিলেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। জয়প্রকাশ, রীতেশদের মতো বরখাস্ত করা না হলেও দূরত্ব তৈরি করে ইতিমধ্যেই সায়ন্তন, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়দের বার্তা দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতারা। এর পরেও বিদ্রোহীদের একাংশের আশা ছিল উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফল প্রকাশ পেলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবেন। রাজ্য কমিটিতে রদবদল, এমনকি অনেক জেলা কমিটিও নতুন করে তৈরি করা হতে পারে বলেও আশা ছিল তাঁদের। বিভিন্ন মহলে সে কথা বলছেনও তাঁরা। কিন্তু শনিবার অমিত মালবীয় যা বলেছেন তার পরে অনেকেই মনে করছেন, রাজ্য বিজেপি-তে রদবদলের সম্ভাবনাই নেই। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিদ্রোহীদের আমল দিতে চাইছেন না।
শনিবার জাতীয় গ্রন্থাগারের সভাকক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অমিত। সেখানে শুরুর বক্তৃতাতেই রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘দল কোনও ব্যক্তির নয়! এটা আসলে টিম ওয়ার্ক। সেই টিমের সিদ্ধান্ত কোনও সময়ে ভুল হয়, আবার কখনও ঠিক হয়। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সেটি দল নিয়েছে মনে করতে হবে।’’ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, অমিত আরও কড়া ভাষাতেই বিদ্রোহীদের বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, রাজ্য ও জেলা স্তরে যে কমিটি তৈরি হয়েছে তা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মনোনয়ন নিয়েই। এ নিয়ে ফেসবুক, টুইটারে কেউ কোনও মন্তব্য করলেও দল যে তা ক্ষমার চোখে দেখবে না এমন ইঙ্গিতও নাকি দিয়েছেন অমিত। জানা গিয়েছে, শনিবার মূল বৈঠকের পরে রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন অমিত। সেখানেও তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কড়া মনোভাবের কথা জানান বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে।