হাথরস-কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
বিজেপি করোনার থেকেও বড় অতিমারি বলে মন্তব্য করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাথরসের ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমে শনিবার তিনি বলেন, ‘‘বাংলায় একটা ছোট ঘটনা ঘটলে যত কমিশন আছে পাঠিয়ে দেয়। ডিজি, এডিজিকে ডেকে পাঠায়। কত প্রশ্ন করে তখন! আর দিল্লির দাঙ্গায় লোক মারা গেলে, উত্তরপ্রদেশে দলিতকন্যাকে ধর্ষণের পরে খুন করে জ্বালিয়ে দেওয়া হলেও কোনও কমিশন নেই।’’ উত্তরপ্রদেশে দলিতকন্যার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা সামনে রেখে প্রায় ছ’মাস পরে রাস্তায় নেমে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিলেন তৃণমূলনেত্রী। এ দিন বিড়লা তারামণ্ডলের সামনে থেকে ধর্মতলায় গাঁধী মূর্তি পর্যন্ত মিছিলে হাঁটেন তিনি। মিছিলের শেষে সভায় মমতা বলেন, ‘‘করোনার জন্য আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচি নিইনি। কিন্তু কী করব? এখন তো অত্যাচারের অতিমারি চলছে, গণতন্ত্রের পথেই তা থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘করোনার মতো অতিমারির সঙ্গে আমরা লড়াই করছি। তবে এ দেশে সব থেকে বড় অতিমারি বিজেপি। দেশটাকে শেষ করে দিচ্ছে।’’
হাথরাসের ঘটনার সূত্র ধরেই বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হল। বাড়ির লোকের হাতে না দিয়ে জোর করে দেহ জ্বালিয়ে দেওয়া হল। তার পরেও কাউকে কথা বলতে দেবে না। বিজেপি সুপার অটোক্র্যাসি চালাচ্ছে। নির্যাতিতার কথা যাতে না দেখানো হয়, সে জন্য সংবাদমাধ্যমকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’’
রাজ্যে তৃণমূলের প্রশাসন নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা অভিযোগ তুলেছেন। সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘একটা অপরাধ হলে মানুষ চায় প্রশাসন পদক্ষেপ করবে। এখানে নির্যাতিতার পরিবারকে ভয় দেখানো হচ্ছে। ফোন পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হয়েছে যাতে তাঁরা কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারেন। বাংলায় এ সব হয় না। এটা এখানকার সংস্কৃতি নয়।’’
আরও পড়ুন: হাথরস-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ যোগী আদিত্যনাথের
আরও পড়ুন: উন্নয়ন কই! রেলশহরে সরব দিলীপ
আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে এ দিন কেন্দ্রীয় সরকারকেও বিঁধেছেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কত পরিযায়ী শ্রমিক রাস্তায় মারা গেছেন, বিজেপি সরকার সেই তথ্য দিতে পারে না। কত দলিত, সংখ্যালঘু মারা যাচ্ছেন, সে তথ্যও তাদের কাছে নেই। আর বাংলার বিষয়ে সব তথ্য চায়।’’ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি ও নতুন কৃষি আইনের সমালোচনা করে মমতা বলেন, ‘‘দেশে দুর্ভিক্ষ হবে। সব শুধু বিজেপি খাবে।’’
দলিত-তফসিলিদের উপর নির্যাতন নিয়ে রাজ্য জুড়ে লাগাতার প্রতিবাদ কর্মসূচির কথাও এ দিন ঘোষণা করেন মমতা। তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি হাথরসের ঘটনার প্রতিবাদে এ দিনই রাজভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখায়।