—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বিজেপিকে ভোট দিলে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ নয়— তৃণমূল নেতাদের এমন মন্তব্যে জেরবার দলের জেলা নেতৃত্ব। যে মন্তব্য হাতিয়ার করেছে বিজেপি। শনিবার সন্ধ্যায় তৃণমূলের দিনহাটা-২ নম্বর ব্লক সভাপতি দীপককুমার ভট্টাচার্য এমন মন্তব্য করেন। রবিবার সন্ধ্যায় মাথাভাঙা শহর ব্লক সভাপতি বিশ্বজিৎ রায়ের মুখেও এমন কথা শোনা যায়।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক সোমবার জানান, ওই দুই নেতাকে সতর্ক করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এর পরে যদি কেউ লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে কোনও মন্তব্য করেন, দল তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। ওই বিষয়ে কিছু বলতে হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি নিয়ে বলতে হবে। তার বাইরে বলা যাবে না।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, দিনহাটার শুকারুরকুঠিতে শনিবার তৃণমূল নেতা দীপক বলেছিলেন, “এলাকার মানুষ সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা, এমনকি লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পাওয়ার পরেও, তৃণমূলকে না দিয়ে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। সেখানে লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে কিছু নাম কেটে দেওয়া দরকার।” কার্যত একই কথার পুনরাবৃত্তি রবিবার সন্ধ্যায় মাথাভাঙা পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ে সমাবেশের প্রস্তুতিসভায় বিশ্বজিৎ রায়ের মুখে শোনা গিয়েছে বলে দাবি। দীপকের মতো বিশ্বজিৎও বলেছেন, “লক্ষ্মীর ভান্ডারের এই টাকাটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিচ্ছেন। তৃণমূল সরকার দিচ্ছে। এটা তৃণমূল সরকারের টাকা।”
বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, “তৃণমূল নেতা-কর্মীরা গ্রামে-গ্রামে এমন প্রচার করছেন। সরকারি প্রকল্পকে নিজেদের সম্পত্তি বলে ভাবছেন।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “কোন পরিস্থিতিতে, কে, কী, কেন বলেছেন, জানি না। তবে বিজেপি নেত্রীর মতো কেউ লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেননি।”
লোকসভা ভোটের আগে একটি জনসভায় বিজেপির কোচবিহার জেলা সহ-সভাপতি দীপা ভট্টাচার্যকে বলতে শোনা গিয়েছিল, বিজেপি ক্ষমতায় এলে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়ে, আনন্দবাজার যার সত্যতা যাচাই করেনি। তৃণমূল ভোটের প্রচারেও বিষয়টি তোলে। বিজেপির অবশ্য দাবি, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ নিয়ে তাদের নেত্রী যা বলেছিলেন, তার একাংশ কেটে ‘মিথ্যে প্রচার’ হয়েছে।