প্রতীকী ছবি।
এনআরসি হলেও কোনও ভয় নেই, হিন্দু পরিবার ধরে ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই অভয়বাণী শোনানোর নির্দেশ এসেছে জেলা বিজেপি নেতাদের কাছে। সোমবার ঝাড়খণ্ডে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, ২০১৪ সালের মধ্যে সারা দেশে এনআরসি চালু হবে। তার পরেই ফের এনআরসি-র ভয় আবার চেপে বসে। অসমে এনআরসি-তে জলপাইগুড়ি বাসিন্দাদের অনেক আত্মীয়-পরিজনদের নাম বাদ গিয়েছে। সেই পরিবারগুলি অমিত শাহের বক্তব্যের পরে আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বিজেপির জলপাইগুড়ি নেতাদের অনেকেও বিব্রত। তাঁদের একাংশের ধারণা, তিনটি উপনির্বাচনেই বিজেপির হারের কারণ এনআরসি নিয়ে ভয়। তাই ফের দলের সর্বভারতীয় সভাপতি প্রসঙ্গটি খুঁচিয়ে দেওয়ায় অস্বস্তি বাড়ে তাঁদের।
বিজেপি সূত্রই জানাচ্ছে, পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে এখন এনআরসি নিয়ে ভয় কাটাতে তাঁদেরই এগিয়ে যেতে হবে। তাঁরা জানাচ্ছেন, বিজেপির সদর থেকে জেলা নেতাদের হিন্দুদের বাড়ি বাড়ি যেতে বলা হয়েছে। আজ কলকাতায় বিজেপির বৈঠক রয়েছে, সেখানে বিস্তারিত নির্দেশ দেওয়া হবে বলে খবর। কিন্তু অসমের এনআরসিতে যাঁদের নাম বাদ পড়েছিল তাঁদের বেশিরভাগই হিন্দু। বিজেপি নেতাদের একাংশের দাবি, এই তথ্য চাউর হয়ে যাওয়ায় তিন উপ নির্বাচনে বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে ধাক্কা লাগে। সেই ক্ষত মেরামতিতে নামতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিজেপির সব সংগঠনকে। এত দিন দলের সাংগঠনিক নির্বাচন চলছিল বলে সে কাজ করা যায়নি বলে দাবি। চলতি সপ্তাহ থেকেই পুরোদস্তুর প্রচারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বুথে বুথে।
যেতে হবে হিন্দু বাড়িতে। কী বোঝানো হবে তাঁদের?
বিজেপির জেলা নেতাদের বলতে বলা হয়েছে, এনআরসি তো হবেই, তার আগে হবে নাগরিকত্ব আইন। তাতে পড়শি যে দেশ থেকেই হিন্দুরা আসুন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সংস্থান থাকবে। বিজেপির দাবি, এই কথা মনে ঢুকে গেলে কারও ভয় পাওয়ার কারণ নেই। তৃণমূলের অভিযোগ, হিন্দু বাড়িতে গিয়ে অভয় দিয়ে বিজেপি আসলে ভোটের আগে মেরুকরণই করতে চাইছে। বিজেপির জেলা সভাপতি দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “নাগরিকত্ব আইন পাশ হলে কী সুবিধে হবে, তা নিয়ে জোরদার প্রচার চালানো হবে।”
ময়নাগুড়ি রোডের বাসিন্দা ধনঞ্জয় রায় বলেন, “আমাদের কাগজ সব বন্যায় হারিয়ে গিয়েছিল। আমাদের বোধহয় ক্যাম্পে থাকতে হবে।”