Suvendu Adhikari

Suvendu Adhikari: রাজ্যে বিজেপি-র দুর্বল সংগঠন বলেই নবান্ন দখল অধরা, প্রকাশ্যে মানলেন শুভেন্দু

আত্মসমালোচনা আগেও হয়েছে বিজেপি-তে। কিন্তু কোনও প্রকাশ্য সভায় এই ভাবে প্রকান্তরে সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই ভরাডুবির কারণ হিসেবে তুলে ধরেননি কেউ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২১ ০২:০৯
Share:

শুভেন্দু অধিকারী ছবি সংগৃহীত।

২০২১ সালে নীলবাড়ি দখলের স্বপ্ন দেখেছিল বিজেপি। কিন্তু আশানুরূপ ফল হয়নি। ৭৭ আসনেই আটকে যায় গেরুয়া শিবির। সেই সময়েই রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলেছিলেন, তৃণমূলের তুলনায় অনেক দুর্বল সংগঠনের জন্যই আশানুরূপ ফল হয়নি বিজেপি-র। রাজ্যে গেরুয়া বাহিনীর সংগঠন নেই বলে ভোটের সময় সমালোচনা করেছে তৃণমূলও। শুক্রবার সেই কথা প্রকারান্তরে মেনে নিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। নতুন রাজ্য সভাপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সুকান্ত মজুমদারের কাছেই সেই আর্জি জানান শুভেন্দু। এমন আত্মসমালোচনা আগেও হয়েছে বিজেপি-তে। কিন্তু কোনও প্রকাশ্য সভায় এই ভাবে প্রকান্তরে সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই ভরাডুবির কারণ হিসেবে তুলে ধরেননি কেউ।

Advertisement

শুভেন্দু শুক্রবার নিজের বক্তব্যের সমর্থনে পরিসংখ্যানও দেন। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি-র সমর্থনের কোনও কমতি নেই। ৩৮.১৩ শতাংশ ভোট পেলে কেন্দ্রে সরকার গড়া যায়। কিন্তু এখানে আমরা এত ভোট পাওয়ার পরেও বিধায়ক সংখ্যা বাড়াতে পারিনি কারণ, অন্য দিকে ৪৭ শতাংশের বেশি ভোট একত্রিত হয়েছে।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে ৭৭ হাজার বুথ রয়েছে। এর মধ্যে ১২ হাজার বুথে কমিটি তৈরি করা খুব কঠিন।‌ কিন্তু বাকি জায়গায় যদি আমরা বুথ কমিটি তৈরি করতে না পারি, বুথ সংগঠন তৈরি করতে না পারি তা হলে আমরা একটা বড় অংশের আসনে জিতব কিন্তু সরকারে যেতে পারব না।’’ শুভেন্দু কর্মীদের বোঝান, গণতন্ত্রে ৫১ মানে একশো আর ৪৯ মানে শূন্য।

বিধাননগরে পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে (ইজেডসিসি) শুভেন্দু জানান, দিলীপ ঘোষ রাজ্য সভাপতি থাকার সময়ে বিধানসভা ভোটের পর্যালোচনা বৈঠকে তিনি কিছু প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাতে বুথ স্তরে সংগঠন বিস্তারের কথা বলেছিলেন। শুক্রবার তিনি সুকান্তের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আমি আশা করব নতুন রাজ্য সভাপতি সেই বিষয়ে খানিকটা যত্নবান হবেন।’’ শুক্রবার শুভেন্দুর বক্তব্যের বড় অংশ জুড়েই ছিল তৃণমূলের সমালোচনা। তারই মধ্যে তিনি বলেন, ‘‘এই সরকারকে সরাতে হলে বুথ স্তরে সংগঠন মজবুত করতে হবে।’’ সেই সঙ্গে কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আমি দলে নতুন। পুরনো সাংগঠনিক বিষয় জানি না। তবে এখন প্রচারে বাকিদের থেকে অনেক এগিয়ে থাকি, জমজমাট প্রচার করতে পারি। কিন্তু আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই নির্বাচনী রাজনীতিতে বিজেপি ধাক্কা খায়।’’ তিনি দাবি করেন, রাজ্যে প্রচুর মানুষ বিজেপিকে সমর্থন করলেও সংগঠন তৈরি না করলে সরকার গড়া যাবে না।

Advertisement

যাঁরা বিজেপি রাজ্যে সরকার গড়বে বলে গেরুয়া শিবিরে এসেছিলে‌ন তাঁদের নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন শুভেন্দু। ভোটের আগে অন্য রাজনৈতিক দল ভেঙে বিজেপি ঠিক করেনি বলে বিভিন্ন মহল আগেই সমালোচনা করেছে। শুক্রবার প্রকারান্তরে সেটাও স্বীকার করে নিয়ে শুভেন্দু দাবি করেন, বিজেপি-তে তিন ধরনের কর্মী ও নেতা আছেন। এক দল আদর্শগত কারণে রয়েছেন। এক দল বিজেপি সরকার গড়বে ভেবে নাম লিখিয়েছিলেন। আর এক দল নৈতিক কারণে লড়াই করার জন্য সব ছেড়ে এসেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আর এক দল বিনা স্বার্থে মনে করেছেন নরেন্দ্র মোদীই সঠিক নেতা, বিজেপি-ই সঠিক মঞ্চ। ওই খানে যাই, বাংলাকে বাঁচাই। ওই দলে আমি পড়ি।’’ এই প্রসঙ্গে টেনে আনেন মুকুল রায়ের প্রসঙ্গও। শুভেন্দুর মতে, তৃ ণমূল সব কেড়ে নেওয়ার পরে মুকুল বিজেপি-তে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আর তিনি তিন দফতরের মন্ত্রিত্ব-সহ অনেক পদ ছেড়ে দিয়ে বিজেপি করতে এসেছেন। দলত্যাগীদের আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘এক দল মানুষ বিজেপি সরকার গড়বে ভেবে নাম লিখিয়েছিলেন। বিজেপি সরকার গড়েনি তাই পালাই বলছেন এখন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement