দলে বেনোজল আটকাতে ছাঁকনির ব্যবস্থা করল বিজেপি। সূত্রের খবর, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশে রাজ্য দলে তৈরি হচ্ছে একটি ‘সিলেকশন কমিটি’। তাদের নজরদারিতেই বিজেপিতে যোগ দিতে পারবেন অন্য দলের নেতা-কর্মীরা। ‘নব্য’ বিজেপি নেতাদের কাজের দায়িত্ব ঠিক করে দেবে ওই কমিটি।
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজ্যে ১৮টি আসন পাওয়ার পর থেকেই মূলত মুকুল রায়ের নেতৃত্বে অন্য দল থেকে নেতা-কর্মী বিজেপিতে যোগ দিতে শুরু করেছেন। মনিরুল ইসলামের মতো তেমন অনেককে নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে খোদ বিজেপির অন্দরে। প্রশ্ন তুলেছে আরএসএস-ও। সংগঠনের দলীয় পত্রিকা ‘স্বস্তিকা’য় লেখা হয়, যোগদানের বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত বিজেপির। একটি ছাঁকনির ব্যবস্থা রাখা উচিত।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, অমিত শাহ সিলেকশন কমিটি তৈরি করে সেই ছাঁকনির ব্যবস্থাটিই করলেন। একই সঙ্গে নব্য নেতারা দলে কী দায়িত্ব পাবেন, তাঁরা দলের নীতি-আদর্শ মানছেন কি না, তা-ও দেখভাল করবে ওই কমিটি। সূত্রের খবর, যাঁদের নিয়ে সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া আছে, তাঁদের দলে নেওয়ার ব্যাপারে ‘সতর্ক’ হতে বলেছেন শাহও।
রবিবার রাতে রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন সর্বভারতীয় সভাপতি। সূত্রের খবর, সেখানে তিনি জানান, লোকসভা অধিবেশন শেষ হলে তিনি এবং দলের কার্যনির্বাহী সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা রাজ্যে আসতে পারেন। ভোট পরবর্তী হিংসায় নিহত দলীয় কর্মীদের পরিবারের সঙ্গে সে সময় দেখাও করতে পারেন তিনি। এ ছাড়াও ওই দিনের বৈঠকে ‘কাট মানি’ নিয়ে দলীয় আন্দোলন গড়ে তোলার নির্দেশ দেন সর্বভারতীয় সভাপতি। যার জবাবে রাজ্য নেতৃত্ব জানান, ইতিমধ্যেই তাঁরা আন্দোলন শুরু করেছেন। আজ, মঙ্গলবার দুপুর ২টোয় হাজরা মোড়ে তাঁদের আন্দোলন কর্মসূচিও আছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির উদ্দেশ্যে অভিযান চালানো হবে কি না, তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি নেতারা।
দলের সাংগঠনিক রদবদল নিয়েও রবিবারের বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই খবর। ভোটে জিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক দেবশ্রী চৌধুরী। বিজেপি মহিলা মোর্চার সভাপতি লকেট চট্টোপাধ্যায়ও এখন সাংসদ। সে সব পদে অন্য কাউকে আনা হবে কি না, সে প্রসঙ্গে বৈঠকে আলোচনা হলেও এখনই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাননি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। শাহ কলকাতায় এলে এ প্রসঙ্গে ফের বৈঠক হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।