হেনস্থা: শালবনির তৃণমূল কর্মী। নিজস্ব চিত্র
জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানো থেকে কান ধরে ওঠ-বোস, বিজেপির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এখন আকছার উঠছে। ফের দাদাগিরির অভিযোগ উঠল গেরুয়া শিবিরের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এক তৃণমূল কর্মীকে কান ধরে বলতে বাধ্য করানো হল যে, তিনি আর ঘর থেকে বেরোবেন না, তৃণমূলের কার্যালয়ে যাবেন না।
এ বারের ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির চকতারিণী। লোকসভায় এখানে ‘লিড’ পায়নি বিজেপি। তারপরেও এলাকায় তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ। তৃণমূল কর্মীকে কান ধরিয়ে হেনস্থার ঘটনার ভিডিয়ো (আনন্দবাজার তার সত্যতা যাচাই করেনি) সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেন্টু রাণা, নিমাই লোহার-সহ কয়েকজনের নামে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন স্বপন ঘোষ নামে ওই তৃণমূল কর্মী। সেন্টুরা বিজেপি কর্মী বলেই স্থানীয় সূত্রে খবর।
পুলিশকে স্বপন জানিয়েছেন, শনিবার রাতে তিনি দোকানে গিয়েছিলেন। দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিজেপির কয়েকজন তাঁকে তুলে নিয়ে নিয়ে একটি ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে হেনস্থা করে। মারধরও করা হয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘বিজেপি জুলুম চালাচ্ছে। এর জবাব ওদের মানুষই দেবে।’’
বিজেপি অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আর পুলিশ জানিয়েছে, শালবনির ঘটনায় অভিযুক্তরা ‘পলাতক’। জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
স্বপনের বাড়ি চকতারিণীতে। তিনি তৃণমূলের স্থানীয় বুথ কমিটির সদস্য। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, ঘরের মেঝের একদিকে বসে রয়েছেন স্বপন। তাঁকে ঘিরে রয়েছে কয়েকজন। তাদের কয়েকজনের হাতে লাঠিও রয়েছে। তাদের সামনে কান ধরে স্বপন বলছেন, ‘‘আমি আর ঘর থেকে বেরবোনি। কথা দিচ্ছি বেরবো না। আমি তো কান ধরে বলছি আর আসবো না (দলীয় কার্যালয়ে)।’’ পুলিশকে স্বপন জানিয়েছেন, বিজেপির ওই লোকেদের কাছে ভোজালি-সহ বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। তাঁকে খুন করারই পরিকল্পনা ছিল। সুযোগ বুঝে তিনি ওই ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে চিৎকার করেন। চিৎকার শুনে স্থানীয় কয়েকজন ছুটে আসেন। তখন বিজেপির লোকেরা পালিয়ে যায়।
তৃণমূলের শালবনি ব্লক সভাপতি নেপাল সিংহ বলেন, ‘‘বিজেপির দুষ্কৃতীরা ওই এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। পুলিশের উচিত, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া।’’ কেন এমন ‘দাদাগিরি’? বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ রায়ের সাফাই, ‘‘ওই ঘটনার ব্যাপারে এখনও পুরোটা শুনিনি। দলের কেউ অন্যায় কাজ করলে দল ব্যবস্থা নেবে।’’