খেজুরিতে ফের রাজনৈতিক অশান্তি— নিজস্ব চিত্র।
রাজনৈতিক সংঘর্ষের জেরে অশান্তি ছড়াল পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে। শুক্রবার রাত থেকে দফায় দফায় খেজুর-১ এবং খেজুরি-২ ব্লকে তৃণমূলের কয়েকটি দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর হয়েছে। অভিযোগ, দখলও হয়ে গিয়েছে কয়েকটি দফতর। ঘটনাচক্রে, শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রিত্ব ছাড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কাঁথি মহকুমার খেজুরি অশান্ত হল।
তৃণমূলের অভিযোগ, হামলা চালিয়েছে বিজেপি। ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকে হেঁড়িয়া-বোগা সড়কের মিঁয়া মোড়ে অবরোধ শুরু করেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। বিজেপি-র জেলা নেতৃত্ব অবশ্য জানিয়েছেন, এই হামলা তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফল।
এই ঘটনা নিয়ে খেজুরি থানা বা কাঁথি মহকুমা পুলিশের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
তৃণমূলের অভিযোগ, খেজুরি-১ ব্লকের বীরবন্দর, পাটনা, কণ্ঠীবাড়ি এলাকার মোট ৬টি দলীয় দফতরে হামলা হয়েছে। ভাঙচুর চালিয়ে সেগুলিতে বিজেপি-র পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার সকালে ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকার তৃণমূল কর্মীরা প্রথমে পার্টি অফিসগুলিতে ঢোকার চেষ্টা করেন। তাতে সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। শেষ পর্যন্ত সঙ্ঘাতের পথে না হেঁটে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা মিঁয়া মোড়ের কাছে রাস্তা অবরোধ করেন। খবর পেয়ে খেজুরি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তৃণমূলের পথ অবরোধ— নিজস্ব চিত্র।
পথ অবরোধে অংশ নিয়ে খেজুরির বীরবন্দর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি শেখ নুরসেদ আলি বলেন, ‘‘আমাদের দাবি, অবিলম্বে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে হবে। বিজেপি-র বাইক বাহিনী রাতের অন্ধকারে এসে আমাদের পার্টি অফিস ভাঙচুর করেছে। আগুন ধরিয়েছে। পার্টি অফিসগুলিতে বিজেপির দলীয় পতাকা লাগিয়েছে। অথচ প্রশাসন শুধু বলছে, ‘বিষয়টি দেখছি’। আমরা শাসকদলে থেকেও পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগিতার অভাব অনুভব করছি।’’ পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিত্বে ইস্তফার পর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বিধায়ক পদ ছেড়ে নিতে চান শুভেন্দু
যদিও পার্টি অফিস দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তাপসকুমার দোলই বলেন, ‘‘পার্টি অফিস দখলের ঘটনার নিন্দা করছি। ভারতীয় জনতা পার্টি দখলদারির রাজনীতি করে না। এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনও য়োগসাজস নেই। তৃণমূলের গোষ্ঠী বিবাদের জেরেই এমন ঘটনা।’’ ক্ষমতায় থেকেও কেন রাস্তায় নেমে তৃণমূল কর্মীদের দলীয় দফতর রক্ষার আন্দোলন করতে হচ্ছে, সে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি অনুপ চক্রবর্তীও খেজুরির অশান্তির জন্য শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে দায়ী করেছেন।
আরও পড়ুন: নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে ২৯৪ কেন্দ্রের প্রার্থীই নিজে বাছবেন শাহ