রাজ্য সভাপতির চেয়ে বেশি ভরসা বিরোধী দলনেতায়! — ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্যায়ের সভা, সমাবেশ শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। তাতে সভার সংখ্যা কিংবা জেলার দায়িত্বে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের চেয়ে কিছুটা এগিয়েই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার থেকেই ২২ জেলায় বড় সমাবেশ শুরু করেছে রাজ্য বিজেপি। বুধবার হাওড়ার পরে বৃহস্পতিবার নদিয়ার সভা করছেন সুকান্ত। এর পর আগামী ৬ জুলাই পর্যন্ত তাঁর সভা রয়েছে কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, পুরুলিয়া ও বীরভূমে। অন্য দিকে, শুভেন্দু বৃহস্পতিবার প্রথমে ঝাড়গ্রাম ও পরে হুগলি দিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রচার শুরু করলেন। এর পর তিনি নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে আরও দু’টি সভা করবেন ৫ ও ৬ জুলাই। তা ছাড়া রাজ্য বিজেপির তালিকা অনুযায়ী সভা রয়েছে, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা ও বাঁকুড়ায়। অঙ্কের হিসাবে সুকান্ত ঘুরবেন সাতটি জেলায়। আর শুভেন্দু ন’টিতে।
বিজেপির দৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ যে সব জেলা তার সব ক’টিতেই শুভেন্দুকে পাঠাচ্ছে দল। গত বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, নদিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়ায় ভাল ফলের আশা করছে বিজেপি। তার সব ক’টিতেই শুভেন্দুর কমপক্ষে একটি করে বড় মাপের সভা করার কথা। শুভেন্দু নিজেই নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে ভাল ফলের আশ্বাস দিয়েছেন নেতৃত্বকে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের জেলায় তিনটি বড় সভা করার দায়িত্ব তিনি যেচেই নিয়েছেন।
তবে সুকান্তের সভা করার কথা যে সব জেলায়, সেগুলিও বিজেপির পক্ষে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। নিজের জেলা দক্ষিণ দিনাজপুরে আগেই অনেকটা সময় দিয়েছেন তিনি। ফের সেখানে বড় মাপের জোড়া সভা করবেন ৫ ও ৬ জুলাই। আবার বিজেপির ‘পাখির চোখ’ কোচবিহারেও একটি সভা করবেন সুকান্ত। সেখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকেরও থাকার কথা। কোচবিহারেও বিজেপি দু’টি বড় সভা করবে। ৩ জুলাই সুকান্তের পরে ৪ জুলাই সেখানে সভা করবেন বিহারের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে। সে দিনও নিশীথের থাকার কথা। আলিপুরদুয়ারেও বিজেপি দু’টি বড় সভা করবে। শুভেন্দুর ২ জুলাইয়ের পর ৪ জুলাই মঙ্গল।
কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে মঙ্গল সভা করলেও তাঁর মূল দায়িত্ব পাহাড় সামলানো। ৩ জুলাই তিনি দু’টি সভা করবেন দার্জিলিং জেলায়। পরের দিন আলিপুরদুয়ার আসার আগে একটি সভা করবেন কালিম্পঙে। পাহাড় যেমন মঙ্গলের দায়িত্বে, তেমনই সাগরের জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনার দায়িত্বে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার পরে বেশ কয়েক বার ওই জেলায় গিয়েছেন দিলীপ। তবে একমাত্র বড় সভাটি করবেন ২ জুলাই। এ ছাড়াও নিজের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর এবং মুর্শিদাবাদেও বড় সভা করবেন তিনি। মুর্শিদাবাদের সভায় দিলীপের সঙ্গে থাকবেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। মালদহের বড় সভায় প্রধান বক্তা অবশ্য রাহুল একাই।
ঝাড়গ্রামে শুভেন্দু বৃহস্পতিবার সভা করলেও আরও একটি বড় সভা হবে ৩ জুলাই। সেটিতে থাকবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার। পশ্চিম বর্ধমানে অবশ্য বিজেপি প্রথম সারির নেতাদের কাউকেই দায়িত্ব দেয়নি। একটিই সভা হবে আগামী ২ জুলাই। থাকার কথা তিন সাংসদ— লকেট চট্টোপাধ্যায়, সৌমিত্র খাঁ এবং জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতোর। তবে এই তিন জনকেই নিজেদের জেলা অর্থাৎ হুগলি, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ায় সভার দিনে মঞ্চে থাকতে হবে। রাজ্য বিজেপির পক্ষে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সব সাংসদ, বিধায়কেরাই নিজের নিজের জেলায় বড় সমাবেশে থাকবেন। যেমন পাহাড়ের সব ক’টি সভাতেই মঙ্গলের সঙ্গে থাকবেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা।